দেশজুড়ে

অনলাইনে সমাজসেবা অধিদফতরের আবেদন; বিপাকে হাজার হাজার ভাতাভোগী

  প্রতিনিধি ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৫:০৩:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

সাইফুল ইসলাম তরফদার, ফুলবাড়িয়া:

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক শতভাগ ভাতা কার্যক্রমের আওতায় অনলাইনে আবেদন করে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার হাজার হাজার ভাতাভোগীরা বিপাকে পড়েছেন। তাদের অভিযোগ সমাজ সেবা অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক বাইরে থেকে আবেদন করে হার্ডকপি জমা দিতে গেলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা অফিস জমা নিচ্ছে না।

জানা যায়, বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলাদের জন্য ভাতা কার্যক্রম এর উপকারভোগীদের কভারেজ সর্বাধিক দারিদ্র প্রবণ ১১২টি উপজেলার মধ্যে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া একটি। সমাজ কল্যাণ অফিসের পত্র ও প্রচার মাধ্যম (মাইকিং প্রচার) শুনে ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন দোকান ও অনেক পরিচিতজনের মাধ্যমে অনেকে আবেদন করেন। ইউডিসি ছাড়া অন্যস্থান থেকে করা আবেদনগুলোর হার্ডকপি পরিষদে জমা দিতে গেলে তারা সেগুলো জমা নিচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা উৎকোচের জন্য বিভিন্ন অজুহাত এনে তালবাহানা করছে। ফলে হাজার হাজার ভাতাভোগিরা তাদের ভাতা পাওয়া নিয়ে দু:শ্চিন্তায় রয়েছেন। অনেকের কাছে ওয়ার্ড মেম্বার ও উদ্যোক্তরা টাকা দাবি করছে। টাকা না দিলে কার্ড হবে না বলে জানান তারা। অনেক উদ্যোক্তরা বলছে, এটা আমাদের হক, কেন আপনারা বাহির থেকে আবেদন করেছেন?

সমাজসেবা অধিদফতর সামাজিক নিরাপত্তা অধিশাখার এক পত্র সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী ভাতা প্রাপ্তির যোগ্য ব্যক্তির শতভাগে উন্নীতকরণ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক (এ২চ) পদ্ধতিতে ভাতাসমূহ শুরু থেকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে উপকারভোগী নির্বাচন ও ভাতা বিতরণ প্রক্রিয়ায় ডিজিটাইজেশন আনয়ন আবশ্যক। সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ভাতা ব্যবস্থাপনা সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম এ আবেদন গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী ভাতা প্রাপ্তির যোগ্য আবেদনকারী ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে নির্ধারিত আবেদন ফরম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য সহ আবেদন দাখিল করবেন। আবেদনকারীগণের ইউডিসি সমাজসেবা অফিস বা অন্য যেকোন অবস্থান থেকে আবেদন করার নির্দেশনা রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন গ্রহণের বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিভিন্ন কমিটির সদস্যবৃন্দ স্থানীয় প্রশাসন সর্ব পর্যায়ে ব্যাপক প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে অবহিত করা হয়।

 

১০ সেপ্টম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করার কথা থাকলেও দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টম্বর পর্যন্ত করা হয়। অথচ ১৬ সেপ্টম্বর জমা দিতে গেলে তারা তালবাহানা করে। তাদের মতে, ১০ সেপ্টম্বর আবেদন জমা দেওয়ার সময় চলে গেছে। অনেক ভাতা প্রত্যাশীরা আবেদন জমা দিতে গিয়ে ফেরত এসেছেন। তারা আবেদন নিয়ে উপজেলা সমাজ সেবা অফিস সহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের কাছে যাচ্ছেন। কিন্তু কোন কাজে আসছে না। ভাতা প্রত্যাশী হাজেরা খাতুন নামের একজন জানান, পরিষদের গেলে তারা বলে আবেদন জমা দেওয়ার সময় চলে গেছে। এ বছর আর হবে না। আবার মেম্বার বলে কিছু টাকা দেইন গা জমা নিবো।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো: হাসান কিবরিয়া বলেন, ভাতাভোগিদের আবেদন যাচাই-বাছাই পূর্বক বাস্তবায়ন কমিটির রেজুলেশন করে অনুমোদন নিতে হবে। কোন আবেদন গ্রহণ করা না হলে যথাযথ কারণ উল্লেখ করে তার ব্যাখ্যা থাকতে হবে। সহসাই কোন আবেদন বাদ দেওয়া যাবে না। আবেদন জমা না নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কতগুলো আবেদন করা হয়েছে তা আমাদের কাছে তথ্য আছে। যদি কোন পরিষদ আবেদন জমা না নেয় তাহলে আমাদের (উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউএনও, সমাজসেবা) কাছেও জমা দিতে পারবে।

আরও খবর

Sponsered content