দেশজুড়ে

অবসরে কৃষিতেও সফল শিক্ষক আব্দুল গফফার

  প্রতিনিধি ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৭:১১:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : সমাজে এমন অনেকেই আছেন যারা কাজকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। দায়িত্বশীলতার সহিত প্রতিটি কাজ করেন। কোন কাজকেই ছোট করে দেখেন না, সরকারি হোক কিংবা নিজের হোক, প্রত্যেক কাজের প্রতি যতœশীল। সমাজে এমন মানুষকে কখনও পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এমন মানুষদের মধ্যে পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল গফফার অন্যতম। অবসরপ্রাপ্ত এ শিক্ষক চাকুরি জীবনে অবসর নিলেও কর্মময় জীবনে তার কোন অবসর নেই। জীবনের প্রতিটি মুহুর্তকে কাজে লাগাতে সার্বক্ষনিক তৎপর রয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিনি কৃষি কাজের মাধ্যমে অবসর সময় পার করছেন। শিক্ষক আব্দুল গফফার ১৯৫৯ সালে পাইকগাছার সীমান্তবর্তী কয়রার মসজিদকুড় গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত মোনতাজ আলী সানা ছিলেন একজন আদর্শ সফল কৃষক। লেখাপড়া শেষ করে আব্দুল গফফার ১৯৮৩ সালে শিক্ষক হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। বাগেরহাট জেলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা জেলা স্কুল সহ অনেক সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুনামের সহিত শিক্ষকতা করেছেন। ২০১৮ সালের ২৮ জুন পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। সচরাচর চাকুরি জীবন শেষ করার পর প্রতিটি মানুষকে পরিবার পরিজনকে সময় দেওয়া কিংবা অলস সময় পার করতে দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম শিক্ষক আব্দুল গফফার। তিনি অবসর জনিত সময়কে কাজে লাগাতে জন্মস্থান মসজিদকুড়ে নিজের দুই বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন সমন্বিত চাষ ব্যবস্থাপনার কৃষি খামার। যার এক বিঘা জমিতে পুকুর খনন করে সেখানে চাষ করেছেন রুই, কাতলা, মৃগেল ও গলদা চিংড়ি সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। খামারের সীমানা দিয়ে রয়েছে ৩০টি’র মতো নারিকেল গাছ। আর পুকুরের পাড়ে চাষ করেছেন বেগুন, টমেটো, সিম, চিচিঙ্গা, শসা, ঝিঙ্গা, লাউ, মিষ্টি কুমরা, বরবুটি, পুইশাক, চালকুমরা, ধুন্দল, ঢেড়স, করল্লা ও কচু সহ হরেক রকম সবজি। নিজেই পরিচর্যা করার পাশাপাশি কৃষি খামারটি দেখভাল করার জন্য তিনি দুইজন শ্রমিক রেখেছেন। প্রতিটি সবজির ফলন অনেক ভালো। উৎপাদিত সবজি পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে প্রতিদিন তিনি বাজারে বিক্রি করে থাকেন। অবসর প্রাপ্ত এ শিক্ষক এখন একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। এ প্রসঙ্গে শিক্ষক আব্দুল গফফার বলেন, কৃষি আমার রক্তে মিশে রয়েছে। আমার বাবা একজন সফল কৃষক ছিলেন। ছাত্র জীবনে বাবার সাথেই কৃষি কাজে সময় দিয়েছি। কৃষি জমির সৎ ব্যবহারের কথা চিন্তা করে এ খামারটি গড়ে তুলেছি। এর মাধ্যমে অবসর সময়টা কাজে লাগাতে পারছি। সময়টাও ভালো কাটছে, পাশাপাশি বাড়তি কিছু আয়ও হচ্ছে। করোনা কালের বেকারত্ব দুরীকরণে কৃষি কতটা ভূমিকা রাখতে পারে এ প্রসঙ্গে শিক্ষক আব্দুল গফফার বলেন, দেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছিল। এমন সময় মহামারী করোনা আমাদের অনেক ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। এখন আমাদের উত্তোরণের পথ খুঁজতে হবে। এ ক্ষেত্রে সমন্বিত কৃষি কাজ ব্যবস্থাপনা অন্যতম মাধ্যম হতে পারে বলে প্রাক্তন এ শিক্ষক মন্তব্য করেন।

আরও খবর

Sponsered content