প্রতিনিধি ২৩ জুন ২০২০ , ৪:৩৩:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ
এসএম ওমর আলী সানি, আগৈলঝাড়া(বরিশাল) : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় করোনাভাইরাস সন্দেহে অসুস্থ এক বৃদ্ধা (৭০)কে তার স্বজনরা সোমবার বিকেলে আগৈলঝাড়া-পয়সারহাট মহাসড়কের ফুল্লশ্রী বাইপাস বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ফেলে রেখে যায়।
স্থানীয় জনতা সড়কের পাশে পরে থাকা বৃদ্ধাকে দেখতে পেয়ে আগৈলঝাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. আফজাল হোসেনকে জানায়। ওসি ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধারকরে আগৈলঝাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়।
স্থানীয় ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭০ বছরের অসুস্থ বৃদ্ধা দীপু বালা জানান, তার স্বামী ও বাবার বাড়ি আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামে। স্বামী অশ্বিনী বালা চার বছর আগে মারা যান। দাম্পত্য জীবনে তিনি নিঃসন্তান। দীর্ঘদিন মানুষের বাসায় ঝিয়ের কাজ করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।
বৃদ্ধ বয়সেও বর্তমানে তিনি বরিশাল নগরীর কাঠপট্টি রোডের ধীরেন সিকদারের বাসায় কাজ করতেন। ওই বাসায় কমরর্ত অবস্থায় পাঁচদিন পূর্বে হঠাৎ করে তিনি অসুস্থ হন। ধীরেন সিকদার স্থানীয়ভাকে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ কিনে দেন। পরে খবর দেয়া হয় তার গ্রামের বাড়িতে।
আস্কর গ্রামের বাড়ি থেকে তার ভাই মনোরঞ্জন সাহার পুত্র মিথুন সাহা বরিশাল থেকে সোমবার বৃদ্ধা পিসি(ফুফু)কে বাড়িতে আনতে গিয়ে গন্তব্য পয়সারহাট বাসস্ট্যান্ডে না নেমে পথিমধ্যে আগৈলঝাড়ার বাইপাস সড়কের বাসস্ট্যান্ডে নামেন।
পরবর্তীতে পিসি দীপু বালাকে দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে করোনাভাইরাস সন্দেহে আগৈলঝাড়া-পয়সারহাট মহাসড়কের ফুল্লশ্রী বাইপাস বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ভাইয়ের ছেলে মিথুন। একপর্যায়ে অসুস্থ বৃদ্ধা সড়কের উপরেই শুয়ে পরতে বাধ্য হন। সাড়ে বারোটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত সময় গড়িয়ে গেলেও দেখা মেলেনি মিথুনের।
স্থানীয়রা আগৈলঝাড় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আফজাল হোসেনকে খবর দেয়। এব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আফজাল হোসেন জানান, আমি খবর পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অসুস্থ বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করায়। হাসপাতালে অসুস্থ বৃদ্ধার সকল প্রকার চিকিৎসা, খাদ্য সহায়তাসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রদান করবেন।
ওসি আরও বলেন, করোনা মোকাবেলায় মানুষের বিবেক জাগ্রত হওয়া দরকার। মানবিকতা বিবর্জিত হলে মাহামারী সংকট আরও ঘনিভুত হবে। বৃদ্ধার ভাইয়ের ছেলের অবহেলার বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার বখতিয়ার আল-মামুন জানান, প্রাথমিকভাবে বৃদ্ধার করোনা উপসর্গ নেই বলে মনে হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বরিশালে পাঠারো হয়েছে করা হবে।