প্রতিনিধি ২২ জুন ২০২০ , ১২:১৮:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। আজ সোমবার (২২ জুন) এশিয়া অঞ্চলে লেনদেন শুরু হতেই প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম রেকর্ড পরিমাণ অর্থাৎ ১৭৫০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। গত ফেব্রুয়ারি -মার্চে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দামে পতন হলেও সম্প্রতি আবার বাড়তে শুরু করেছে। আজ সোমবার দাম বাড়ায় গত এক সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বেড়েছে দেড় শতাংশের ওপরে। গত বছরের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ১৪৫৪ ডলার। এরপর করোনার প্রকোপের মধ্যে ফেব্রুয়ারি ১৬৬০ ডলারে উঠে যায়।
এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের এই দাম বাড়ায় দেশের বাজারেও দাম বাড়ানো হয়। যার ফলে গত ফেব্রুয়ারিতে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম রেকর্ড ৬১ হাজার ৫২৭ টাকায় ওঠে। ২১ ক্যারেট ৫৯ হাজার ১৯৪ এবং ১৮ ক্যারেটের দাম ৫৪ হাজার ১৭৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতিতে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ হয় ৪১ হাজার ৪০৭ টাকা।
তবে মার্চে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়। এক ধাক্কায় দাম কমে প্রতি আউন্স ১৪৬৯ ডলারে নেমে আসে। মার্চে দরপতন হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় নেয়নি। হু হু করে দাম বেড়ে মে মাসে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম রেকর্ড ১৭৪৮ ডলারে উঠে যায়। এরপর ছোটখাটো উত্থান-পতন হলেও গত এক সপ্তাহে স্বর্ণের দাম আবার বেড়েছে। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ১৭৪৩ ডলারে ওঠে। এতে বছরের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম বাড়ে ২৩ শতাংশ। অবশ্য মাসের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম দশমিক ২৯ শতাংশ কম থাকে। আর আজ আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেনের শুরুতেই প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়ে ১৭৫২ ডলারে উঠেছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং মাসের ব্যবধানে ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ বাড়ল স্বর্ণের দাম। আর বছরের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ২৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
দেখা যায়, দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম পুনর্র্নিধারণ করার পর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়েছে ২৮০ ডলারের ওপরে। আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক দরপতন হওয়ায় সর্বশেষ গত মার্চে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কিছুটা কমানো হয়। সে সময় দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) ভরিতে স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) দাম নির্ধারণ করে ৬০ হাজার ৩৬১ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫৮ হাজার ২৮ এবং ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৫৩ হাজার ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতিতে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় ৪০ হাজার ২৪১ টাকা। তবে গত দুই মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম প্রায় ২০ শতাংশ বাড়লেও দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম পুনর্র্নিধারণ করা হয়নি। এতে দেশের বাজারে লোকসানে স্বর্ণ বিক্রি করতে হচ্ছে বলে দাবি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের।
এদিকে করোনার কারণে দেশের বাজারে স্বর্ণের বিক্রি ব্যাপক হারে কমে গেছে। যে কারণে চাহিদা না থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার পরও দেশের বাজারে বাড়েনি। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে দাম সমন্বয় না করার কারণে দেশের স্বর্ণ বাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে দেশ থেকে স্বর্ণ পাচার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন স্বর্ণের সংকট দেখা দিতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা।