প্রতিনিধি ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৪:৪৫:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ
আবারও গৃহবন্দি করা হয়েছে ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে। উপত্যকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় দাবি করে তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি। সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, তাকে ফের গৃহবন্দি করায় বোঝা যাচ্ছে- কাশ্মিরের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের দাবি ভিত্তিহীন।
মঙ্গলবার টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় মেহবুবা মুফতি জানান, তিনি কাশ্মিরের দক্ষিণাঞ্চলীয় কুলগামে যেতে চেয়েছিলেন। তাই তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মির প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উপত্যকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। তাই তাকে গৃহবন্দি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
টুইটারে মুফতি আরও বলেন, ‘আফগান নাগরিকদের অধিকার নিয়ে ভারত সরকার উদ্বেগ প্রকাশ করছে। কিন্তু কাশ্মিরিদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। কাশ্মিরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়, এই যুক্তিতে আজ আমাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। এ দিকে ভারত সরকার দাবি করছে- উপত্যকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বোঝাই যাচ্ছে সেই দাবি ভিত্তিহীন।’
২০১৯ সালের আগস্টে কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সময় অন্য নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে গৃহবন্দি ছিলেন মেহবুবা মুফতিও। পরে আরও কয়েকবার তাকে গৃহবন্দি করা হয় বলে জানিয়েছিলেন এই পিডিপি নেত্রী। সম্প্রতি হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলী শাহ গিলানির মৃত্যুর পরে উপত্যকায় ফের নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। তবে তা শিথিল হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে দাবি করা হয়েছে।
এদিকে সমালোচনার মুখে পড়ে সৈয়দ আলী শাহ গিলানির দাফনের ভিডিও প্রকাশ করেছে ভারতের পুলিশ। গিলানির পরিবারের দাবি, পুলিশ দরজা ভেঙে গিলানির মরদেহ পরিবারের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। নিজেদের বক্তব্যের সমর্থনে কয়েকটি ভিডিওতে এই তথ্য প্রকাশ করে তারা।
এরপরে পুলিশের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন মেহবুবা মুফতি, হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ ওমর ফারুক-সহ অনেকে। প্রথা মেনে গিলানির দাফন করা হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে। সমালোচনার জবাব দিতে পুলিশের পক্ষ থেকে সেই ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে টুইটারে জানানো হয়েছে, গিলানির মৃত্যুর পরেই জম্মু-কাশ্মির পুলিশের আইজি বিজয় কুমার-সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা শ্রীনগরের হায়দারপোরায় তার বাড়িতে যান। সেখানে গিলানির দুই ছেলের সঙ্গেই কথা বলেন তারা। ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির’ কথা মাথায় রেখে সে দিন রাতেই গিলানির মরদেহ সমাহিত করার কথা বলেন পুলিশ কর্মকর্তারা। দুই ছেলেই রাজি হন।
পুলিশের দাবি, এর ঘণ্টা তিনেক পর থেকেই সম্ভবত পাকিস্তানের চাপে সুর বদলান গিলানির দুই ছেলে। মরদেহ পাকিস্তানি পতাকায় ঢেকে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। প্রতিবেশীদের রাস্তায় নামতেও উস্কানি দেন। এর পরেই পুলিশ গিলানির অন্য আত্মীয়দের সাহায্যে মরদেহ সমাধিক্ষেত্রে নিয়ে যায়।
কাশ্মিরের পুলিশ বলছে, গিলানিকে দাফনের সময় দুই ছেলের না থাকার সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে তাদের কাছে বাবার প্রতি শ্রদ্ধার চেয়ে পাকিস্তানের হয়ে কাজ করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।