আন্তর্জাতিক

আল-আকসায় হামলা: ফিলিস্তিনের পক্ষে ৩২ দেশ

  প্রতিনিধি ৯ মে ২০২১ , ৮:২১:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদে জুমাতুল বিদায় মুসল্লিদের জমায়েতকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৭টি দেশ। এছাড়া, তুরস্ক, রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।

জেরুজালেমের উত্তেজনা নিরসন করার জন্য শনিবার (০৮ মে) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে ইইউ। এছাড়াও পৃথক পৃথক বিবৃতি দিয়েছে তুরস্ক, রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব। এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করেছে দেশগুলো। খবর ডেইলি সাবাহর।

ইইউ মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সহিংসতা ও উসকানি অগ্রহণযোগ্য এবং অপরাধী এবং মদদদাতাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হারাম আল শরীফকে ঘিরে উসকানিমূলক আচরণগুলো এড়িয়ে চলতে হবে এবং এর প্রতি সম্মান করতে হবে। রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের সংযম ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শন করা উচিত। পাশাপাশি এই অস্থির পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা জরুরি।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (০৭ মে) জুমাতুল বিদার পর থেকেই ইসরায়েলি দখলদারিত্বের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করা হয় শেখ জাররাহসহ পূর্ব জেরুজালেমের বিভিন্ন স্থানে। ইফতারের পর রমজানের বেজোড় রাত্রিতে, লাইলাতুল কদর সন্ধানে নামাজ আদায়ের জন্য আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন ফিলিস্তিনিরা। এ সময়ই তাদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি পুলিশ। এমনকি নামাজরতদের লক্ষ্য করে গুলিও চালানো হয়। মসজিদ থেকে পিটিয়ে বের করে দেওয়া হয় অনেককে। ছোড়া হয় টিয়ার শেল। এ সময় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে আটকও করা হয়।

জেরুজালেমের পুরনো শহরাঞ্চল আল জাররাহ থেকে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে ইহুদিবাদী দখলদারেরা উচ্ছেদ করবে এমন খবরে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে ইসরায়েলি পুলিশ আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর চড়াও হয়। ওই সংঘর্ষে দুইশোর অধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, মুসল্লিদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে ইসরায়েলি বাহিনী লাঠিপেটা করেছে, রাবার বুলেট ছুড়েছে। এমনকি স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপও করেছে তারা। মুসল্লিদের ঘিরে রেখে তাদের ওপর অমানবিক আচরণ করেছে দখলদার দেশটির পুলিশ। ওই এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল। আল-আকসা মসজিদ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম শ্রদ্ধার স্থান। এ স্থানটিতে আগেও একাধিকবার সহিংসতা হয়েছে, যা আবার দেখা গেল শুক্রবার।

ইসরায়েলি পুলিশের দাবি, নামাজের পর ‘হাজার হাজার ধর্মাবলম্বী দাঙ্গা শুরু করলে’ তারা ‘আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য’ শক্তি প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়। হামলার সময় আল-আকসার একজন কর্মকর্তা মসজিদের লাউড স্পিকারে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। লাউড স্পিকারে তিনি পুলিশ বাহিনীকে অবিলম্বে মুসল্লিদের উদ্দেশে স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ বন্ধ করার অনুরোধ করছিলেন এবং মুসল্লিদের শান্ত হতে বলছিলেন।

এ সহিংসতার পর সবাইকে উত্তেজনা প্রশমন করার আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। সেই সঙ্গে জেরুজালেমের শাইখ জারাহ এলাকা থেকে উচ্ছেদের হুমকিতে ক্ষোভও বাড়ছে।

জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন যেকোনো ধরনের উচ্ছেদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা হয়। বিক্ষোভকারীদের প্রতি সর্বোচ্চ সহনশীল আচরণ দেখানোর আহ্বান জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content