প্রতিনিধি ৩ মার্চ ২০২২ , ৪:৩০:১১ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোরের দর্পণ ডেস্ক:
ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলায় নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফের মরদেহ জাহাজের ভেতরেই ফ্রিজিং করে রাখা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবর (৩ মার্চ) বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের নির্বাহী পরিচালক পীযুষ দত্ত চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার (২ মার্চ) স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে জাহাজে রকেট হামলা হয়। এতে প্রাণ হারান আরিফ। এ ঘটনায় তার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
এদিকে জাহাজটিতে নাবিক ও ইঞ্জিনিয়ারসহ এখনও ২৮ জন অবস্থান করছেন। জাহাজে রকেট হামলার পর নাবিকরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। জীবন বাঁচানোর জন্য তারা সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, এই মুহুর্তে জাহাজটি বন্দর ছেড়ে যাওয়া নিরাপদ নয়। নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সবাইকে জাহাজে অবস্থান করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
জাহাজটিতে এক মাসের খাদ্য মজুত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন পীযুষ দত্ত।
এদিকে জাহাজটির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার রবিউল আউয়াল এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমাদের জাহাজে রকেট হামলা হয়েছে। একজন মারা গেছেন। আমাদের জাহাজে পাওয়ার সাপ্লাই নেই। ইমার্জেন্সি পাওয়ার সাপ্লাইয়ে আমরা চলছি। আমরাও সবাই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছি। দয়া করে আমাদের বাঁচান।’
‘বাংলার সমৃদ্ধি’ নামের এই জাহাজটি ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সেখানে আটকে পড়ে। এ জাহাজটির মালিক বাংলাদেশ শিপিং করোরেশন।
গত ২৬ জানুয়ারি এটি ভারতের মুম্বাই বন্দর থেকে যাত্রা করে এবং তুরস্কের ইরেগলি হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছায়। জাহাজটি বন্দরে পৌঁছানোর পরদিন ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হয়। ইউক্রেন থেকে সিরামিকের কাঁচামাল নিয়ে তাদের ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল।
হামলায় নিহত আরিফের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা। বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা বাজারসংলগ্ন চেয়ারম্যান বাড়ির বাসিন্দা মো. আবদুর রাজ্জাক (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক) ও আমেনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে আরিফ।
তিন ভাই এক বোনের মধ্যে বোন সবার বড়। এরপর হাদিসুর রহমান। তার ছোট দুই ভাই লেখাপড়া করেন বরগুনায়। আরিফই শুধু উপর্জন করতেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা। ছেলের লাশ দেশে আনার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন তারা।