প্রতিনিধি ৪ নভেম্বর ২০২৫ , ১:০৪:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরাইলের প্রতি সমর্থন বন্ধ করে এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের হস্তক্ষেপের নীতি পরিবর্তন করে, তবেই তেহরান ওয়াশিংটনের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) তেহরানে এক অনুষ্ঠানে খামেনি বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র ইহুদিবাদী শাসনের প্রতি সমর্থন পুরোপুরি ত্যাগ করে, এই অঞ্চল থেকে সামরিক ঘাঁটি সরিয়ে নেয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ করে, তাহলে আমরা সহযোগিতার সম্ভাবনা বিবেচনা করতে পারি।” তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মনোভাব এমন যে তারা সবসময় আত্মসমর্পণই চায়, অন্য কিছু নয়।” ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের পর যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস দখলের বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। ওই বিপ্লবের মাধ্যমে পশ্চিমা সমর্থিত শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল।
চলতি বছরের জুন মাসে ইসরাইলের আকস্মিক বিমান হামলার পর ইরান-ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রও স্বল্প সময়ের জন্য সেই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ১২ দিনের ওই সংঘাতে ইরানে নিহত হয় ৯৩৫ জন এবং ইসরাইলে প্রাণ হারায় ২৪ জন। ইরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়, ফলে দুই দেশের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনা স্থবির হয়ে যায়। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় ২৪ জুন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ইরান বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছে, বিশেষ করে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে এসে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে। সম্প্রতি ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া চালু করার পর জাতিসংঘও ইরানের ওপর পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেছে।
খামেনির সাম্প্রতিক মন্তব্যে স্পষ্ট—তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইলেও শর্ত দিচ্ছে, ওয়াশিংটনকে প্রথমে মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের নীতি ও ইসরাইল-সমর্থনমূলক অবস্থান পরিবর্তন করতে হবে।

















