কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি ১১ অক্টোবর ২০২৫ , ৭:০০:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ
উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বিশেষ দলের পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগের কথা উল্লেখ করে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, দেশের মানুষ গত এক বছর আগে একটি দানবীয় সরকারকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিলে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুছের নেতৃত্বে একটি সরকার গঠন করা হয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একজন ভালো মানুষ। তিনি ছয়টি সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে দেশের নানা ক্ষেত্রে বাপক সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন এবং দেশের অর্থনীতিকে পুণরুদ্ধারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনকে ঘিরে একটি মহল ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিএনপিকে সংস্কার বিরোধী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। চতুর্দিক থেকে বিএনপিকে ঘায়েল করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে এমন দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, দেশ এখন নির্বাচনের রাস্তায় উঠে গেছে, তা এখন চালিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। দলের সাবেক নেতা আ.স.ম হান্নান শাহ’র নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
সভায় প্রধান অতিথি মির্জা ফখরুল বলেন,এ সরকারের নেওয়া সংস্কার কর্মসূচির সাথে বিএনপির কোনো বিরোধ নেই। বরং বিএনপিই এসব সংসস্কারের ধারক বাহক। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় সরকারের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছেন।
স্বাধীন গণমাধ্যম চালু করেছেন, এ দেশের নারীদেরকে চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছেন, সংবিধানে বিসমিল্লাহ চালু করা এবং আল্লাহর উপর অবিচল আস্থার বিষয়টি সংযোজন করেছেন। আর দেশনেত্রি বেগম খালেদা জিয়া অবৈতনিক নারী শিক্ষা চালু করেছেন। সর্বশেষ দেশ নায়ক তারেক জিয়া ঘোষিত ৩১ দফার সাথে বর্তমান সরকার ঘোষিত সংস্কার কর্মসূচির কোনো বিরোধ নেই। অথচ একটি মহল বিএনপিকে সংস্কার বিরোধী হিসেবে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। ভারত আমাদের সাথে সব সময় শত্রুতা করে আসছে। ভারতের সীমান্ত রক্ষীরা নির্বিচারে গুলি করে আমাদের দেশের মানুষকে হত্যা করে যা পৃথিবীনর সভ্য কোনো দেশ করে না। তারা ফারাক্কার পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদের দেশের মানুষের জানমালের ক্সীত করে। তাই তাদের সাথে আমরা এমন বন্ধুত্ব চাই, যেখানে কোনো অবিচার থাকবে না এবং সম্পর্কটা হবে সমানে সমান।
তিনি আরো বলেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ.স,ম হান্নান শাহকে তিনি বিশেষভাবে শ্রদ্ধা করেন। কারণ তিনি ছিলেন একজন অকৃত্রিম দেশপ্রেমিক নির্ভিক সাহসী সৈনিক। তিনি বীরের বেশে দেশের মানুষকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আজীবন লড়াই করেছেন। ফখরুদ্দিন মঈনুদ্দিন সরকারের আমলে একটি কুচক্রি মহল যখন দলের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল তখন তিনি দলের পক্ষে ও দেশনেত্রীর পক্ষে নির্ভিকচিত্তে সাহসী বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি ব্যক্তি সার্থকে কখনো বড় করে না দেখে দলের ও দেশের সার্থকে বড় করে দেখেছেন। তাই তার ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নানকে আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে কাপাসিয়া বাসীর হাতে তুলে দিয়ে তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহবান জানান তিনি।
গাজীপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে এবং কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও হান্নান শাহ’র ছেলে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ, কেন্দ্রীয় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক ড.এম এ কাইয়ুম, সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, নির্বাহী সদস্য ওমর ফারুক শাফিন, মজিবুর রহমান, গাজীপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দীকি প্রমুখ।
এর আগে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা উপজেলার ঘাগটিয়ার গ্রামে হান্নান শাহ’র কবরে পুষ্প স্তবক অর্পন করেন এবং রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।

















