প্রতিনিধি ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ , ৩:৪৪:১১ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কম খরচে অধিক মুনাফায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। ধানের তুলনায় তিনগুণ বেশি ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকছেন চরাঞ্চল সহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা। বাজারে মিষ্টি আলুর দর ও চাহিদা থাকায় অনেক খুশি আলু চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ মৌসুমে উপজেলায় সবজি চাষের লক্ষ্য মাত্রা প্রায় ১ হাজার ৫০ হেক্টর। তার মধ্যে মিষ্টি আলুর চাষও রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মুরা সাকি ও ওয়াকি নাওয়া উন্নত জাতের ১০ টি মিষ্টি আলুর প্রদর্শনী রয়েছে। প্রতিটি প্রদর্শনীতে ২০ শতক করে জমি রয়েছে। এ সকল প্রদর্শনী প্রতি চাষিদের বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও এবারে জমিতে বিভিন্ন জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় ধান চাষের পরিবর্তে মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কেউ পরিচর্যায় ব্যাস্ত আবার কেউ মিষ্টি আলু উঠাতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। অল্প খরচে অল্প সময়ে দ্বিগুণ লাভ হওয়ায় তিস্তার চরাঞ্চল সহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা আলু চাষের প্রতি ঝুঁকছেন। তারা জানান, মিষ্টি আলুর চাহিদা ও দাম বাজারে থাকায় তারা অনেক খুশি। এক সময় আমাদের চরাঞ্চলে এক ফসলের আমন ধানের চাষ হতো। আর বছরের বাকি সময় জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকত। তাছাড়া ধান চাষে পরিশ্রমের পাশাপাশি খরচও অনেক বেশি। তাই চলতি বছর উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় মিষ্টি আলুর চাষ করেছি বলে জানান তারা।
তিস্তার চরাঞ্চলের মিষ্টি আলু চাষি কাদের মিয়া জানান, এবারে ২০ শতক জমিতে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় মিষ্টি আলুর চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আলুর কাটিং ও সার বিনামূল্যে দিয়েছেন। জমি তৈরি করা থেকে এ পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত বাম্পার ফলন হওয়ায় তিনি এখান থেকে ২০ মণ আলুর আশা করছেন। কয়েকদিনের মধ্যে আলু উঠিয়ে বাজার জাত করা শুরু করবেন। বর্তমান বাজারে মোণ প্রতি ৭’শ থেকে ৮’শ বিক্রি হচ্ছে। তিনি প্রায় ১৪ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকার আশা করছেন। তিনি আরও জানান, খরচের টাকা উঠানোর পরেও ১০ হাজার টাকার আশা করছেন।
এছাড়াও তিস্তার চরাঞ্চল সহ বিভিন্ন এলাকার মিষ্টি আলু চাষিদের মাঝে মাইদুল ইসলাম, লিয়াকত আলী ও ওসমান সহ আরও অনেকে বলেন, অল্প সময়ে অল্প খরচে মিষ্টি আলু চাষে দ্বিগুণ লাভ করা সম্ভব। আমাদের উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মিষ্টি আলু চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল। তার পরেই আমর মিষ্টি আলুর চাষ করেছি। অনেক ভালো ফলন হয়েছে। আশা করছি দ্বিগুণ লাভ হবে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, তিস্তার চরাঞ্চল সহ বিভিন্ন এলাকার চাষিদের মিষ্টি আলুর চাষ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করায় এখন অনেকে মিষ্টি আলুর চাষ করেছেন। অনেক ভালো ফলন হয়েছে। আশাকরছি তারা অনেক লাভবান হবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, মিষ্টি আলু চাষে অল্প সময়ে অল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ করা সম্ভব। মিষ্টি আলুর অনেক পুষ্টিগুন থাকায় বাজারে অনেক চাহিদা থাকে। এখন মাঠ থেকে আলু তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। তাছাড়া অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে দ্বিগুণ ফলনের পাশাপাশি বাজারে ভাল দাম থাকায় কম খরচে অধিক মুনাফার আশায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।