প্রতিনিধি ২ নভেম্বর ২০২৪ , ৫:৩৮:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমায় তীরের পাড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক মাস ধরে উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত দুর্গম সাহেবের আলগা ইউনিয়নের সুখেরবাতির চর, ঘুঘুমারির চর, চর খোদাইমারি, উত্তর খাওয়ারিয়া, সোনাপুর, সাহেবের আলগা, হবিগঞ্জ খেয়ারচর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভয়াবহ ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অনেক মানুষ।
এছাড়া ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে একটি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র সহ খুদিরকুটি কমিউনিটি ক্লিনিক। প্রায় এক হাজার বিঘা ফসলি জমিসহ প্রায় সহস্রাধিক বসতবাড়ি। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে এসব পরিবার সর্বশান্ত হয়ে গেছে।
এলাকাবাসী জানায়, সাহেবের আলগা ইউনিয়নে ভাঙনের হুমকির কবলে রয়েছে সাহেবের
আলগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ঘুঘুমারির চর এবতেদায়ি মাদ্রাসা ও জামে মসজিদ, সুখের বাতির চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুখের বাতির চর নুরানি ও হাফেজি মাদ্রাসা, চর খোদাইমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উত্তর খাউরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নামাজের চর মহাবিদ্যালয়, গেন্দার আলগা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাতলামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উত্তর নামাজের চর কমিউনিটি ক্লিনিক এছাড়া হুমকির মুখে আছে সুখের বাতির চর, ঘুঘুমারির চর, সাহেবের আলগা ও খোদাইমারি সহ পাঁকা সড়ক।
নদে ভেঙ্গে যাওয়া কছির আলী (৪৫), সুমেশ চন্দ্র (৫০), দেলবর আলী (৬২), নজরুল ইসলাম (৪৭) ও সাইফুল ইসলাম (২৬) সহ আরও অনেকে বলেন, বর্তমান নদী ভাঙ্গনে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে আমাদের আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই পর্যন্ত নেই। বাড়ি ভিটে হারিয়ে আমরা দিশেহারা হয়ে গেছি।
সুখেরবাতিচর এলাকার তশমারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী মল্লিকা খাতুন ও আরিফা খাতুনসহ অনেকে বলেন, আমদের এই এলাকায় অনেক মানুষ বসবাস করতো। ভাঙনের কারনে সবাই ভিটেমাটি হারা হয়েছে। নদী ভাঙনের ফলে আমাদের স্কুল হুমকির মুখে, স্কুল ভেঙে গেলে আমরা কোথায় পড়াশুনা করবো। ভাঙ্গনে অনেক ফসলী জমি বিলিন হয়েছে। অনেক গরীব মানুষ তারা কষ্ট করে ফসল উৎপাদন করছে নদী ভাঙনের ফলে তাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
সাহেবের আলগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমে যাওয়ায় ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। এখানে ফসলী জমি-বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে। স্থানীয় মানুষ অনেক কষ্ট করে বসবাস করছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মকর্তাকে অবগত করেছি। কিন্তু তারা ভাঙন রোধে কাজ করার আশ্বাস দিলেও কোন কাজ শুরু করেনি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ভাঙন রোধে সাময়িক সময়ের জন্য কোন বরাদ্দ নেই। স্থায়ী ভাবে ভাঙন রোধের জন্য প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। প্রকল্পের বরাদ্দ পাওয়া গেলে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হবে।