প্রতিনিধি ১০ নভেম্বর ২০২১ , ৬:৩৭:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোরের দর্পণ ডেস্ক:
করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি থেকে উত্তরণের জন্য আগামী এক বছর জ্বালানি তেলের মূল্য না বাড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ডিজেলের এক পয়সাও দাম বাড়াতে পারবেন না। দাম বাড়ানোর প্রয়োজনও নাই। বাংলাদেশের তহবিলে ৪৮ হাজার বিলিয়ন ডলার জমা আছে। এগুলো কি কবরে নিয়ে যাওয়ার জন্য? একটা বছর দাম বাড়ানো দরকার নেই। এই বছরটা ভর্তুকি দেবেন।’
আজ বুধবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে জ্বালানি তেলের দাম ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি, লাগামহীন দ্রব্যমূল্য এবং জনদুর্ভোগের প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ভাসানী অনুসারী পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
গণপরিবহনে ভ্যাট এবং শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বাস-ট্রাক-স্কুটার-কৃষকদের ব্যবহৃত তেলের জন্য ভ্যাট-শুল্ক প্রত্যাহার করেন। সাহেবদের গাড়ির জন্য ট্যাক্স বাড়িয়ে দেন। পাবলিকের জন্য ট্যাক্স প্রত্যাহার করলে আপনাদের জন্য ভালো হবে। দেশ উন্নত হবে।
শহীদ নূর হোসেন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আজ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শহীদ নূর হোসেন দিবস। সে কবরে শুয়ে ভাবছে হাসিনাকেও তো এখানে আসতে হবে। উনি কীভাবে আমার কাছে ক্ষমা চাইবেন। আমি এত অল্প বয়সে জীবনটা দিয়ে গেলাম, আমি তাকে বলতে শেখালাম স্বৈরাচার নিপাত যাক গণতন্ত্র মুক্তি পাক। কিন্তু গণতন্ত্র কি মুক্তি পেয়েছে?
এ সময় ডা. জাফরুল্লাহ সরকারকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, দেশে দুই কোটি পরিবারকে খুব কম টাকায় রেশনিং দেওয়া দরকার। ২৫ টাকা কেজি চাল, ১৫ টাকা কেজি আটা, ৫০ টাকা কেজি দরে ডাল দেওয়া যেতে পারে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকারের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক মনে করি, সময়োচিত মনে করি। বিশেষ করে করোনা পরবর্তী এই সময় দাম বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক বাজারের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অথবা আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম স্থিতিশীল থাকলে এই বাজেট এবং পরবর্তী বাজেট পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করতে বলব।
ডিজেল থেকে ভ্যাট শুল্ক কমানোর আহ্বান জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, গত সাত বছরের জ্বালানি তেল থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে সরকার। তারা বলেছে আগের দামে বিক্রি করলে প্রত্যেক দিন ২০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। তাহলে এক বছরে ছয় হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি দিতে হবে। ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে আগামী ৭ বছর ভর্তুকি দিতে পারেন। শুধু কি ভর্তুকি দিচ্ছেন? এখানে লাভ করছেন না? প্রতি লিটার ডিজেলে সরকার ১১ টাকা ভ্যাট নিচ্ছে। অন্যান্য শুল্কসহ ১৭ টাকা নিচ্ছেন। এই ১৭ টাকা মাফ করে দিলে তো তেলের দাম বাড়ানো লাগে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য রাখাল রাহা, ৬৯’ গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ আসাদের ছোট ভাই ডা. নূরুজ্জামান নূর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।