প্রতিনিধি ২০ অক্টোবর ২০২০ , ৫:১৩:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
বাপ্পা মৈত্র, সিলেট :
পররষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এমপি বলেছেন, আমার বিশ্বাস আকবর এখনও দেশের বাইরে যায়নি। কারণ সীমান্তগুলোকে আমরা সাথেসাথে সতর্ক করে দিয়েছি। রায়হান হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত পুলিশের এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া (সাময়িক বরখাস্ত) বিদেশে পালিয়ে গেলেও তাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এরআগে সিলেটের রাজন হত্যার আসামিকে সৌদি আরব থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিলো।
মঙ্গলবার দুপুরে নগরের আখালিয়ায় রায়হান আহমদের বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। এসময় রায়হান হত্যার ন্যায়বিচারেরও আশ্বাস দেন তিনি। এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, এসময় তিনি এসআই আকবরকে পুলিশের জন্য লজ্জ্বা উল্লেখ করে বলেন, এরকম দুএকজন কুলাঙ্গারের কারণে পুলিশ বাহিনীও লজ্জ্বিত। পুলিশের কেউ তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে না। সুষ্ঠ তদন্ত চলছে। সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, মিডিয়া এই ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করেছে সে জন্য আসল অপরাধীরা বেরিয়ে আসছে। তবে এই ইস্যু নিয়ে হরতাল অবরোধ করা ঠিক হবেনা। কারণ, এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে কিছু লোক ঘোলা পানিতে মাছ চাষ করতে চাইবে। প্রসঙ্গত, গত ১০ অক্টোবর রায়হানকে ধরে নিয়ে আসা হয় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে। ওই দিন রাতে ফাঁড়িতে তার ওপর নির্মম নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দিতে টাকা দাবি করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে রায়হানের ফোন পায় তার পরিবার। তাতে ফাঁড়ি থেকে তাকে ছেড়ে দিতে টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানান রায়হান। পরিবারের কাউকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করেন রায়হান।
ভোরে তারা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে। পরে সকাল ১০টার দিকে গেলে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছেন। এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্মম নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলো উপড়ানো ছিল। পুলিশ দাবি করে, রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের ফুটেজে এর কোনো প্রমাণ মেলেনি।
পরদিন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকেল ৩টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক করবস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। মামলার পর এর তদন্তভার দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।