প্রতিনিধি ৯ মে ২০২০ , ৭:৪৭:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার খাড়াজোড়া গোয়ালবাথান ফ্লাইওভার এলাকায় দুটি ছিনতাই ও একটি খুনের ঘটনায় পাচজনকে গ্রেফতার করেছে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে ইকবাল হোসেন প্রিন্স(৩০) পিতা–মাসুম রানা, গ্রাম–উওর হিজলতলী, থানা–কালিয়াকৈর, জেলা–গাজীপুর। একই উপজেলার চাপাইর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে তামিম(২৪), একই উপজেলার কুতুবদিয়া গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে মাসুদ (২২), একই উপজেলার আশাপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে সজল(২২) ও সুমন মিয়া(৩২) টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার কামাফাবাড়ী এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে।
এদের মধ্যে ইকবাল হোসেন প্রিন্স ও সজল গাজীপুর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবান বন্ধিতে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। অপর ৩জনকে গাজীপুর জেল হাজতে প্রেরন করেছে পুলিশ। তিনটি ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
মামলা ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার খাড়াজোড়া গোয়ালবাথান ফ্লাইওভার এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী ও ডাকাত দল দীর্ঘ দিন ধরে প্রতি রাতে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনায় পথচারীদের মালামাল ছিনতাই করে আসছে। এরই মধ্যে ছিনতাই করতে গিয়ে একজন যুবক ও একজন প্রাইভেটকার আরোহী ছিনতাইকারির হাতে খুন হয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী থানার হাউজিং সোসাইটির সাইফুল ইসলামের ভাড়াটিয়া আবু তাহের গত ৪ এপ্রিল মটর সাইকেল যোগে নাটোর থেকে কোনাবাড়ী যাওয়ার সময় রাত সোয়া আটটার দিকে খাড়াজোড়া রেলওভার ব্রীজে পৌছায়। সেখানে পৌছা মাত্র অপর একটি মোটর সাইকেলে তিনজন ছিনতাইকারী মোটরসাইকেল ভেরিকেট দিয়ে গলায় ধারালো চাপাতি দিয়ে ভয়ভিতি দেখিয়ে কিল ঘুষি ও থাপ্পর মেরে মটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় আবু তাহের থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তৎপর হয়। মামলার আয়ু থানার এস আই আব্দুল হাকিম। পরে গত বুধবার পুলিশ ইকবাল হোসেন প্রিন্সকে মটরসাইকেলসহ আটক করে। পরে তার নামে মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরন করে। সেখানে গাজীপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড আদালতে বিচারক নাজমুন নাহরের আদালতে ১৬৪ ধারায় আদালতে জাবান বন্ধি দেয়। সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার ও ঘটনার সাথে জড়িতদের নাম বললে পুলিশ ওই সকল আসামীদের গ্রেফতার। এদর মধ্যে সজল গাজীপুর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি প্রদান করে। বাকীদের জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। এর আগে গত ১ মে এস আই ভজন চন্দ্র রায় অপর আরেকটি গ্রুপের ভয়ংকর ছিনতাইকারীর সদস্য রাজা মিয়া, রঞ্জু মিয়া ও রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। তবে এই তিনছিনতাইকারী রফিকুল ইসলাম নামের এক প্রাইভেটকার আরোহিকে খুনের কথা স্বীকার করেন বলে পুলিশ জানান।
আসামীদের তথ্যে জানা যায়, জামালপুর জেলার সদর থানার পলাশগাও এলাকার ইব্রাহিমের ছেলে রফিকুল ইসলাম(৪০) গত ২৬–০৩–২০ইং তারিখ টাঙ্গাইল থেকে গাজীপুর যাওয়ার পথে খাড়াজোড়া গোয়ালবাথান ফ্লাইওভার এলাকায় পৌছায়। ভোর ৪ ঘটিকার সময় পাশের জঙ্গল থেকে তিনজন ছিনতাইকারী গাড়ীর জানালা দিয়ে পেটের বাম পাশে রক্তাক্ত জখম করে মোব্ইাল সেট নিয়ে যায়। পরে তাকে কালিয়াকৈর থানার এস আই ভজন চন্দ্র রায় উপজেলা হাসপাতাল ও পরে শেখ ফজিলাতুনেছা হাসপাতালে ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ এপ্রিল বিকেলে মারা যান। ওই ঘটনায় গত ১৩–০৪–২০ইং থানার এস আই ভজন চন্দ্র রায় কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলরার আয়ু থানার এস আই ভজন চন্দ্র রায়।
অপর দিকে বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার উওর করমজা এলাকার মৃত রমজান আলী মন্ডলের ছেলে রাশেদ মিয়া টঙ্গি চেরাগ আলী এলাকায় একটি ফার্র্মেসীতে চাকুরী করতো। গত ১১–০৪–২০ইং তারিখে তার পিতা মারা যায়। তার পিতার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাশেদ মিয়া খাড়াজোড়া গোয়ালবাথান ফ্লাইওভার এলাকায় পৌছালে ছিনাইকারীরা তাকে ছুুড়িকাঘাত করে নগদ তিন চার হাজার টাকা ও মোবাইল সেট ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরের দিন পুলিশ তার লাশ মর্গে পাঠায়। ওই ঘটনায় তার চাচাত ভাই লিবন বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলরার আয়ুু এস আই মনিরুজ্জামান।
কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আলমগীর হোসেন মজুমদার জানান, কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আলমগীর হোসেন মজুমদার জানান, করোনার কারণে পুলিশ মানুষকে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ছিনতাইকারীরা তৎপর হয়ে উঠে। আমরা দুইটি গ্রæটের আট সদস্যকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছি।ওই সড়কে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।