প্রতিনিধি ২৮ জুন ২০২০ , ৮:০৩:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি : উপজেলার কালিয়াকৈর এলাকায় দোকান ঘরের ভাড়া না দেয়ায় ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রোববার সকালে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও ঘুড়ি উড়ানোর কারনে এক শিশুকে আচড়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ দুটি ঘটনায় শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার লতিফপুর এলাকার মোয়াজ্জেম হোসাইনের ছেলে শাখাওয়াত হোসেন (৩৫), একই এলাকার মৃত কালু মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন ও উপজেলার সাজনধারা এলাকার আলী হোসেনের ছেলে রিয়াজ হোসেন (৬)।
জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সামসুল হক দুটি ঘটনা ঘটিয়েছেন। উপজেলার কালিয়াকৈর বাজারে পল্লিবিদ্যুৎ অফিসের সামনে ওই চেয়ারম্যানের দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন লতিফপুর এলাকার শাখাওয়াত হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী।
কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে ব্যবসায় ভাটা পড়ায় কয়েক মাসের ভাড়া বকেয়া পড়ে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার সকালে ওই ব্যবসায়ীকে ডেকে পাঠান সাবেক ওই চেয়ারম্যান সামসুল হক। তার ভয়ে ওই ব্যবসায়ী পাশের শ্রমিক নেতা কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে তার দোকান ঘরে যান। এ সময় ওই চেয়ারম্যান ও তার ছেলে মৃদুল হোসেনের নেতৃত্বে অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জন লাঠি-সোঠা নিয়ে দোকান ঘরে হামলা চালায়। হামলা চালিয়ে ব্যবসায়ী শাখাওয়াত ও শ্রমিক পরিবহন নেতা কামালকে এলোপাথারি মারধর করেন।
ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন ব্যবসায়ী শাখাওয়াতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং কামাল হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এ ঘটনায় আহত শাখাওয়াতের বাবা মোয়াজ্জেম হোসাইন বাদী হয়ে রোববার বিকেলে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অপরদিকে উপজেলার সাজনধারা এলাকার আলী হোসেন ও তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কালিয়াকৈর বাজার এলাকায় ওই চেয়ারম্যান সামসুল হকের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সেখানে বাসা ভাড়া থেকে তাদের ছেলে রিয়াজ স্থানীয় শাহীন স্কুলে নার্সারীতে লেখা-পড়া করে আসছে।
কিন্তু গত বুধবার সকালে ওই শিশুটি বাসার সামনে ঘুড়ি উড়ানোর কারনে ইটের খন্ড দিয়ে ঢিল ছুড়ে তার পায়ে আঘাত করে। পরে তাকে দৌড়ে ধরে উচু করে আচড়ে দেয়। এতে সে আহত হন। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে সাজনধারা এলাকা থেকে কয়েক শতাধিক লোক ওই চেয়ারম্যানের বাসার সামনে যায়। এ সময় উত্তেজিত লোকজন ওই চেয়ারম্যানকে গালিগালাজ করে।
আহত শিশু রিয়াজের মা রুমি আক্তার জানান, আমার ছেলেকে আচড়ে দেয়ার খবর পেয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে কয়েকশত লোক ছুটে আসে। তবে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন ওই চেয়ারম্যান।
অভিযুক্ত আটাবহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সামসুল হক জানান, আমি মারি নাই। ঘর ভাড়া চাওয়ায় উল্টো আমাকেই মারধর করে। এছাড়া ওই শিশুকে আচড়ে দেওয়ার অভিযোগটিও মিথ্যা।
এদিকে আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিছ বলেন, তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তিনি জানান, ব্যবসায়ীকে মারধর ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।