প্রতিনিধি ১৩ জুন ২০২৫ , ৫:২৭:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রচণ্ড তাপদাহ আর ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। শুকিয়ে যাচ্ছে মানুষের গলা। বিশেষ কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। অনেকে বিভিন্ন ধরনের পানিয় খাবার খেয়ে তৃষ্ণা নিবারন করছেন। বিপাকে পড়েছেন খেটে খওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা। এদিকে অতিরিক্ত তাপদাহের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের রুগীর সংখ্যা। এছাড়া দুপুরের পর থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত ফাঁকা হয়ে পড়ছে উপজেলার পৌর বাজার সহ বিভিন্ন এলাকা। এদিকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় টানা কয়েকদিন থেকে পড়ছে প্রচন্ড গরম।
পৌর শহরের ভ্যান চালক ও বিভিন্ন এলাকার মাঠে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষেরা তাপদাহে হাঁপিয়ে উঠছে। ঘরের ফ্যানের বাতাসও যেন গরম হয়ে উঠছে। তারপরও রয়েছে মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিনের তিব্র তাপদাহের কারণে অন্যান্য দিনের তুলনায় দ্বিগুন বাড়ছে রুগীর সংখ্যা। তার মধ্যে ডাইরিয়া, জ্বর, নিউমোনিয়া ও পেটব্যথা রুগীর সংখ্যাই বেশি। এরকম তাপদাহ চলতে থাকলে রুগীর সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে বলে জানান তারা।
সরেজমিন উপজেলার পৌর বাজার সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রচন্ড তাপদাহ আর ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। শুকিয়ে যাচ্ছে মানুষের গলা। বিশেষ কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। এদিকে খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছে বিপাকে। অতিরিক্ত তাপদাহের কারণে নেই তেমন কোন কাজ। যদিও কাজ পাচ্ছি গড়মে যেতে কষ্ট হচ্ছে। তার পরেও পেটের দায়ে কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
এছাড়া গত কয়েক দিন থেকে বেলা বাড়ার সাথেই বাড়ছে তাপপ্রবাহ। আজ শুক্রবার ১৩ জুন দুপুরের দিকে তাপমাত্রা ৩৭.৫ ডিগ্রী। যা গত দিনের তুলনায় আজ অনেক বেশি।
শ্রমজীবী ও স্থানীয়রা বলেন, গরমে কোনো কাজ করতে পারছেন না তারা। পৌর শহর ও গ্রাম এলাকায় গরমে নাভিশ্বাস বাড়ছে মানুষের। এদিকে তাপদাহ বাড়ার কারণে বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের ফলের দাম।
পৌর শহরে বড়ুয়া তবকপুর রাজার ঘাট এলাকা থেকে ভ্যান নিয়ে আসা আদেশ চন্দ্র বলেন, গত কয়েকদিনের তাপদাহে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তেমন বেশি ভাড়া পাচ্ছিনা। যদিও ভাড়া পাচ্ছি প্রচন্ড তাপদাহে তা নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তারপরও পেটের দায়ে ভাড়া নিয়ে যেতে হচ্ছে। অন্যান্য সময় দিনে যে টাকা আয় হত তার থেকে অনেক টাকা কম আয় হচ্ছে এ তাপদাহে। এভাবে চলতে থাকলে আমারা খেটে খওয়া মানুষেরা অনেক বিপাকে পড়ে যাবো।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, তীব্র তাপদাহের ফলে মানব দেহে শ্বাসকষ্ট, গা ঘেমে যাওয়া, মাথাব্যথা, শরীরে জ্বালাপোড়া, পানি তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া, ডাইরিয়া ও শিশুদের নিউমোনিয়া সহ জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়বে। এ সমস্ত নিরাময়ে প্রচুর পরিমাণ তরল খাদ্য ফলের রস, ফলের জুস, ডাবের পানি ও ছায়াযুক্ত জায়গায় অবস্থান সেই সাথে রঙিন পোশাক পরিধান না করার পরামর্শ দেন তিনি।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, জেলার উপর দিয়ে মৃদু তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। আজ শুক্রবার (১৩ জুন) জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এরকম অবস্থা আগামী ১৪ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে। তবে ১৪ তারিখের পর থেকে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।