প্রতিনিধি ১৪ অক্টোবর ২০২১ , ৬:০৪:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
মাহফুজুর রহমান, চাঁদপুর প্রতিনিধি:
কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়া এবং সেটিকে কেন্দ্র করে সহিংসতার জের ধরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মন্দিরে হামলা ও পুলিশের সাথে হামলাকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এই ঘটনায় গতকাল বুধবার রাত ১১টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে শহরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, গতকাল রাত সোয়া ৮টায় হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় ‘তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিল থেকে একটি গ্রুপ লক্ষ্মীনারায়ণ আখড়ায় ঢিল ছোড়ে। এবং উত্তেজনা বাড়ার একপর্যায়ে মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ গুলি চালায়। এতে তিনজন নিহত ও পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন মো. সাখাওয়াত উল্যাহ বলেন, নিহত তিন ব্যক্তির লাশ আজ সকালে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতরা হলেন- বাবলু (২৮), আল আমিন (১৮) ও শিশু হৃদয় (১৪) নামের কিশোর।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এসএম শোয়েব আহমেদ চিশতী বলেন, “৮-১০ জন গুরুতর আহত অবস্থায় এসেছে। তাদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড (জেলা হাসপাতালে) করা হয়েছে।”
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে এবং পুলিশের সাথে অতিরিক্ত বিজিবি এবং র্যাব মোতায়েত করা রয়েছে।
হাজীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ ভোরের দর্পণকে জানান, ‘ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যেকোন ধরনের অপৃতিকর পরিস্থিতি রুখতে বাহিনী কাজ করে চলেছে। আমাদের চট্রগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন স্যার ঘটনাস্থলে আসবেন এবং এই বিষয়ে বিস্তারিত ব্রিফ করে জানাবেন।
এদিকে কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননাসংক্রান্ত খবরটি খতিয়ে দেখছে সরকার। গতকাল এক তথ্য বিবরণীতে সরকারের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে, কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননাসংক্রান্ত খবরটি সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে যদি কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইন হাতে তুলে না নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে ।