প্রতিনিধি ১৭ জুন ২০২০ , ১২:৫৫:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ
মজিবুর রহমান, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা): চট্রগ্রামের পতেঙ্গা থানা থেকে ছেড়ে অবৈধ যাত্রী নিয়ে কয়েকটি জেলা শহর পেরিয়ে অবশেষে নেত্রকোণার কেন্দুয়া থানা পুলিশের জালে আটক হয়েছে ৫টি বাস। পোশাককর্মীদের কৃষি শ্রমিক সাজিয়ে লকডাউন ভেঙে যাত্রী বহণ করার দায়ে বাসের চালকদের অর্থদন্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। জানা গেছে, কৃষির উৎপাদন অব্যাহত রাখার স্বার্থে সরকার কৃষি শ্রমিকদের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ করার নির্দেশনাকে পুঁজি করে একটি চক্র বাড়তি ইনকামের পায়তারায় মেতে উঠেছে।
পোশাককর্মীদের কৃষি শ্রমিক সাজিয়ে লকডাউন ভেঙে বিভিন্ন পদ্ধতিতে শহর থেকে এলাকায় পাঠাচ্ছে ওই দালাল চক্র। প্রতিটি গ্রামে বহিরাগতরা ছড়িয়ে পড়ায় গ্রামের লোকজনদের মাঝে এক প্রকার আতংক সৃষ্টি হয়েছে। এরই মাঝে কেন্দুয়া উপজেলা দুই জনের করোনায় পজিটিভ পাওয়া গেছে। আক্রন্ত দু’জনই পোশাককর্মী। যেকারণে আতংক আরো ঘনিভূত।
গত বুধবার (২২ এপ্রিল) রাতে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানা থেকে দুইটি বাসে করে লোকজন কৃষি শ্রমিক সেজে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় প্রবেশ করে। এ সময় পথে সাহিতপুর বাজার এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টে তাদের থামানো হলে দেখা যায়, এদের অধিকাংশই গার্মেন্টস কর্মী ও অন্যান্য পেশার লোক এবং এদের বেশিরভাগের বাড়ি কেন্দুয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
অনুরূপ কায়দায় বৃহস্পতিবার আবারো ৩টি বাসে যাত্রী নিয়ে আসলে সাহিতপুর বাজার পুলিশের চেকপোস্টে আটকিয়ে প্রশাসন কে খবর দেয়া হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-ইমরান রুহুল ইসলাম দ্রুত ঘটনা স্থলে পৌঁছেন এবং সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর অধীনে বাস ৩টির চালককে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৩টি মামলায় ৩ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেয়া হয়। আর আগের দিন আসা দু’টি বাসের চালকে ভ্রাম্যমাণ আদালত একই আইনে দু’টি মামলায় ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেয়া হয়েছিল।
একই সঙ্গে যাত্রী পরিবহনকারী গরীবুল্লাহ চয়েস ও মায়ের আঁচল পরিবহন, হাওলাপুরী নামে দুটিসহ আরো একটি বাস জব্দ করা হয়। কেন্দুয়া থানা ওসি রাশেদুজ্জামান বলেন, আমরা গোপনসুত্রে খরব পাই কৃষি শ্রমিকের চলাচলে সরকারের নির্দেশনাকে পুজি করে এক শ্রেণির লোক কৃষি শ্রমিক সাজিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে এলাকায় পাঠাচ্ছেন।
বুধবার সাহিতপুর বাজার আমাদের চেকপোস্টে ২টি বাস আটক করে শ্রমিকের নামে তালিকার সাথে যাত্রীদের নামে মিল নেই। বৃহস্পতিবার ৩টি বাসে একই অবস্থা। কৃষি শ্রমিকে নাম দিয়ে নারী পোশাককর্মীসহ অন্য পেশার লোকজন বহন করায় বাসগুলো আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হয়।
আদালতের নির্দেশে বাস ৫টি জব্দ করা হয়েছে এবং চালক ৫ জনকে বাসের ভেতরেই সঙ্গরোধে রাখা হয়েছে। এছাড়া জরিমানা অনাদায়ে বাস ৫টি নিলামে বিক্রি করার নির্দেশ রয়েছে ভ্রাম্যমান আদালতের বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান, বাসে আসা সকল যাত্রীদের তালিকা করা হয়েছে এবং ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইন মানতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।