প্রতিনিধি ১২ নভেম্বর ২০২৪ , ৪:২২:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ
মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত স্ত্রীকে বাঁচাতে রিকশা চালক স্বামীর আকুতি। গৃহবধু রোকসানা আক্তার (২৬) এর জীবন বাঁচাতে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন রিকশাচালক স্বামী আক্তার হোসাইন। ২০১৯ সালের প্রথম দিকে গৃহবধু রোকসানার ডান হাতে একটি ফোস্কা উঠে। ওই ফোস্কা থেকে ধীরে ধীরে টিউমার ক্যান্সারে রুপ নেয়।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে দুই বার অপারেশন হলেও নির্মূল করা যায় নি ক্যান্সার। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেলের সহকারী অধ্যাপক আর্থোস্কোপিক জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট ও অর্থোপেডিক এন্ড ট্রমা সার্জন ডা. জাবেদ জাহাঙ্গীর তুহিনের পরামর্শে ২০২০ সালের দিকে নগরীর ডেল্টা হসপিটালে অপারেশন করে তার ডান হাত কেটে ফেলা হয়। এর কিছুদিন পর ওই ডান হাতের পাশে বগলে টিউমার ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে। বগলেও বড় একটি ফোস্কা দেখা দেয়। এখান থেকে ব্রেস্টে আক্রান্ত হয়। চমেকের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তাকে কেমোথেরাপির পরামর্শ দেন। চারটি কেমোথেরাপি দিতে হবে বলে জানান চিকিৎসক। একবার কেমোথেরাপি দিলে খরচ পড়বে প্রায় ষাট হাজার টাকা। এর পর পরিক্ষা-নিরিক্ষা শেষে আবারও অপারেশনের কথা বলেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ। অনেকে পরামর্শ দেন ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নিতে। দিনে আনে দিনে খায় এমন অসহায় রিকশাচালকের পক্ষে ৫/৬ লক্ষ টাকা খরচ করে চিকিৎসা চালানো সম্ভব নয়। তিনি স্ত্রীকে বাঁচাতে চায়। সহযোগীতা চায় সমাজের বিত্তশালীদের কাছে।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়নের পশ্চিম শীলকূপ মোয়াজ্জিম পাড়া ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দরিদ্র্য দিনমজুর রিকশা চালক মো. আক্তার হোসাইনের সাথে আজ থেকে আট বছর আগে রোকসানা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের প্রথম কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের দুই বছর পর রোকসানার এ রোগ ধরা পরে। সে থেকে দীর্ঘদিন ধরে মরণব্যাধি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে আছেন এ দম্পতি। তাদের সংসারে রয়েছে সাত বছরের একটি কন্যাশিশু।
আক্তার হোসাইন পেশায় একজন রিকশা চালক। সহায় সম্পত্তি বলতে মাথাগোঁজার ঠাঁই বেড়ার একটি ঘরই আছে তার। দৈনিক ৪/৫শ টাকা আয় করেন তিনি। ধারদেনা করে এ পর্যন্ত চিকিৎসা চালিয়ে আসছেন স্ত্রীর।অনেক টাকা খরচ হলেও রোগের কোনো গতি হলো না। একদিকে সংসারের খরচ অন্যদিকে স্ত্রীর চিকিৎসা। কোনভাবেই চালিয়ে উঠতে পারছেন না রিকশাচালক স্বামী আক্তার হোসাইন। কান্না জরিত কণ্ঠে অসহায় স্বামী আক্তার হোসাইন প্রতিবেদক কে জানান, প্রায় ছয় বছর পূর্বে আমার স্ত্রী রোকসানার ডান হাতে একটা ফোস্কা উঠে। একটি ফোস্কা থেকে এতো বড় রোগ হয়ে গেল। দিন দিন অবস্থার অবণতি হলে তাকে চমেকের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তারের পরামর্শক্রমে নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে সেখান থেকে নগরীর ডেল্টা হসপিটালে ভর্তি করাই। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তারদের সহযোগিতায় পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাঁর দেহে মরণব্যাধী ক্যান্সার রোগ ধরা পড়ে।পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রদান করেন সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। এমনকি সেখানের বেশ কয়েকজন ডাক্তারের সহযোগিতায় আমার স্ত্রীর অস্ত্রপচার করেন।
ডান হাত কেটে ফেলার পরও আমার স্ত্রী সুস্থ হয়নি। এ টিউমার ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে বগলে, পরে ব্রেস্টে ছড়িয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন তাকে বিদেশে চিকিৎসা করানোর জন্য। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় ইতোমধ্যে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃশ্ব হয়েছেন তিনি। এখন স্ত্রীর চিকিৎসা সেবা করানোর মত কোন টাকা-পয়সা নেই। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে অনেক টাকার প্রয়োজন যা সংগ্রহ করা তারপক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বানদের সহযোগিতায় আমার স্ত্রী সুস্থ্য জীবনে ফিরে আসতে পারবে। তাই স্ত্রীর জীবন বাঁচাতে সবার কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করছি। কেউ যদি সহযোগিতা করতে চান তাহলে রোগীর স্বামীর মোবাইল নাম্বার- ০১৮৮০৯২৫৩৫৫ যোগাযোগ করতে পারেন। অথবা সাহায্য পাঠাতে পারেন তার বিকাশ ও নগদ- ০১৮৮০৯২৫৩৫৫ এই নাম্বারে।