বাংলাদেশ

গত তিন নির্বাচনের কর্মকর্তারা দায়িত্বে থাকবেন না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  প্রতিনিধি ১২ অক্টোবর ২০২৫ , ৩:০৭:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

গত তিন নির্বাচনের কর্মকর্তারা দায়িত্বে থাকবেন না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের কাউকে আসন্ন নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হবে না। এই সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। রোববার (১২ অক্টোবর) সচিবালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সভায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য করণীয় বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে:

১.দেশের শান্তি ও সুষ্ঠু ভোটপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে যেকোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গ্রুপকে আইনের আওতায় আনা।

 ২.সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমন্বয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন।

 ৩.জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওসিদের মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব নিরপেক্ষভাবে পালনের নির্দেশনা।

 ৪.আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য আইনবহির্ভূত কার্যকলাপ এড়ানোর নির্দেশনা।

 ৫.ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা। পর্যাপ্ত বডি-ওর্ন ক্যামেরা সরবরাহ।

 ৬.গত তিন নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের আসন্ন নির্বাচনে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা।

 ৭. আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি রোধে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা।

 ৮. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বাচন প্রশিক্ষণ দ্রুত সম্পন্ন করা।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, নির্বাচনে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে তিন দিনের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সারাদেশে ২৮ ব্যাচে ১৩০টি ভেন্যুতে এটি অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যেই একটি ব্যাচের (৬,৫০০ জন) প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে এবং দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণ চলছে। পুলিশের চূড়ান্ত (চতুর্থ পর্যায়ের) প্রশিক্ষণ ৫ অক্টোবর শুরু হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সকল ব্যাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হবে।

আনসার-ভিডিপি সদস্যদের জন্য ‘প্রাক-নির্বাচনী প্রশিক্ষণ’ দেওয়া হবে। ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রে ৫ লক্ষ ৮৫ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে; এর মধ্যে ১ লক্ষ ৩৫ হাজারকে অস্ত্রসহ এবং ৪ লক্ষ ৫০ হাজারকে নিরস্ত্র প্রশিক্ষণ। এছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার ব্যাটালিয়নের ৩,১৫৭ জন রিক্রুট সিপাহি নিয়োজিত থাকবেন। বিজিবি’র ১১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। ইতোমধ্যেই ৬০% প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ডিসেম্বরের শেষের মধ্যে এটি শেষ হবে। এবারের নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় ৮০ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে। সীমানা পুনর্নির্ধারণের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত এবং নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফ্যাসিস্ট দলের কিছু ব্যক্তি অনুষ্ঠান বিঘ্নিত করতে চেয়েছিল, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় প্রচেষ্টায় তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে।

উপদেষ্টা আরও জানান, মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। শুধু বাহক নয়, মাদকের গডফাদারদেরও আটক করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

আরও খবর

Sponsered content