প্রতিনিধি ১০ নভেম্বর ২০২২ , ৭:৩০:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ
আবু তাহের, চট্টগ্রাম ব্যুরো :
আমদানি নিষিদ্ধ হাঁস-মুরগির খাবার (এমবিএম) চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরশনের ডাম্পিং স্টেশনে পুঁতে ফেলার পর সেখান থেকে পুনরায় চোর চক্র পণ্যগুলো সরিয়ে অন্যত্র পাচারের প্রাক্কালে পুলিশের হাতে জব্দ হয়েছে। নিষিদ্ধ পণ্য গর্তে পুঁতে ফেলার পর সেখান থেকে তুলে তা পুনরায় পাচার হওয়ার বিষয়টি প্রশাসন তথা নগরবাসীকে হতবাক করেছে।
সোমবার (৭ নভেম্বর) রাতে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর আনন্দবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পণ্যসহ ১০টি ট্রাক জব্দ করে চট্টগ্রাম কাস্টমস কতৃপক্ষ ও বন্দর থানা পুলিশ।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, কাস্টমস আইন অনুযায়ী আমদানি নিষিদ্ধ হাঁস-মুরগির খাবার (এমবিএম) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ময়লার ডিপো ল্যান্ডফিল এলাকায় ডাম্প করা হয়। পণ্যগুলো গর্ত করে মাটি চাপা দেয়ার কথা থাকলেও পাচার চক্রের যোগসাজশে সংশ্লিষ্টরা বস্তাসহ পণ্যগুলো গর্তে রেখে মাটি চাপা দেয়। পরে চোর চক্র তাদের সুবিধা মতো সময়ে মাটি খুঁড়ে গর্ত থেকে বস্তাগুলো তুলে নিয়ে সহজে পাচার করে দেয়। এ কাজে ডাম্পিংয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারী লোকজন ও চোর চক্রের একটি অবৈধ সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এমবিএম মূলত মাছ ও হাঁস-মুরগির জন্য আমদানি নিষিদ্ধ খাবার, যা প্রাণীর বর্জ্য ও হাড় থেকে তৈরি করা হয়। এগুলো দূষিত হিসেবে প্রমাণিত। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের একটি প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এমবিএম আমদানি নিষিদ্ধ করে। কিন্তু আগে আমদানি করা বা পরেও ভিন্ন পণ্য হিসেবে কৌশলে আমদানী করার পর খালাস না হওয়া পণ্য ধ্বংস করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ধ্বংস করা পণ্যই আবার সুকৌশলে গর্ত থেকে তুলে ছড়িয়ে দেয়া হয় দেশের নানা প্রান্তে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাস্টমসের একজন কর্মকর্তা জানান, পণ্য ধ্বংসের জন্য বড় গর্ত তৈরি করে পুঁতে ফেলা হয়। এ অবস্থা থেকে আগেও পণ্য তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে নিয়ম মতে, বস্তা থেকে পণ্য মাটির সাথে মিশিয়ে এরপর পুঁতে ফেলার কথা। কিন্তু চোর চক্রের সাথে আঁতাত করে পণ্য ধ্বংসে সংশ্লিষ্টরা বস্তাসত পুঁতে রাখে। পরে এসব বস্তা ট্রাকে করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, পণ্য চুরির খবর পেয়ে আনন্দবাজার এলাকা থেকে ১০ ট্রাক পণ্য আটক করেছি। এসব পণ্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ধ্বংস জন্য করার জন্য নিয়ে গেছে শুনেছি। এ বিষয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার মোঃ মুশফিকুর রহমান বলেন, ধ্বংসের পণ্য চুরির বিষয়ে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। পণ্যগুলো কোথায় নেয়া হচ্ছে তা তদন্তে সাপেক্ষে বলা যাবে। যারাই এ কাজে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।