প্রতিনিধি ১২ অক্টোবর ২০২৫ , ১২:০৭:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ
অবরুদ্ধ গাজার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিজ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন হাজারো ফিলিস্তিনি। তবে ইসরাইলের লাগামহীন বোমাবর্ষণে গাজার উত্তরাঞ্চল এখন প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের আবাসন অধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত বালাকৃষ্ণ রাজাগোপাল বলেছেন, ইসরাইলকে অবিলম্বে গাজায় তাঁবু ও ক্যারাভান প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে, যাতে বাস্তুচ্যুত মানুষদের অন্তত অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা যায়।
শনিবার (১১ অক্টোবর) আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যুদ্ধের মানসিক প্রভাব ভয়াবহ। উত্তর গাজার মানুষের জীবনে এখন ধ্বংস আর শোক ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।” রাজাগোপাল জানান, ইসরাইলি বাহিনী পিছু হটার পর থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরে ফিরে আসতে শুরু করেছেন। কিন্তু তারা ফিরে পাচ্ছেন শুধু ধ্বংসাবশেষ। জাতিসংঘের হিসাবে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজার ৯২ শতাংশ আবাসিক ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আর লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে তাঁবু ও অস্থায়ী আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, “চলতি বছরের শুরুর দিকে গাজায় তাঁবু ও ক্যারাভান পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু ইসরাইলের কঠোর অবরোধের কারণে সেগুলোর বেশিরভাগই প্রবেশ করতে পারেনি। যদি ইসরাইল প্রবেশপথগুলোর নিয়ন্ত্রণ শিথিল না করে, তাহলে গাজার জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠানো সম্ভব হবে না।”
গাজায় বাড়িঘর ধ্বংসের বিষয়টি বর্ণনা করতে রাজাগোপাল “ডোমিসাইড” শব্দটি ব্যবহার করেন। তার ভাষায়, “বাড়িঘর ধ্বংস করা এবং মানুষকে উচ্ছেদ করে এলাকাটিকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলা গণহত্যার অন্যতম প্রধান উপায়। গাজার পুনর্গঠন সম্পন্ন হতে কয়েক প্রজন্ম লেগে যাবে।” ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার সময় ফিলিস্তিনিদের যে জাতিগত নির্মূলের মুখে পড়তে হয়েছিল, সেটির উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আজকের গাজা যেন সেই নাকবারই পুনরাবৃত্তি। গত দুই বছরে যা ঘটেছে, তা ফিলিস্তিনের ইতিহাসে আরেকটি গভীর ক্ষত হিসেবে থেকে যাবে।”

















