প্রতিনিধি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৬:০৪:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ
নুর মোহাম্মদ রানা, চট্টগ্রাম ব্যুরো :
চট্টগ্রামের মহানগরের কর্ণেলহাট কৈবল্যধাম বিশ্ব কলেনী আকবর শাহ ও সিডিএ সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ওয়ার্কশপ। যত্রতত্র ওয়ার্কশপে লোহা ও স্টিলের সামগ্রী তৈরির ফলে ভয়াবহ শব্দদূষণ বেড়েছে। বর্তমান নগর জীবনের মারাত্মক সমস্যার নাম শব্দদূষণ। এই শব্দদূষণ নাগরিক জীবন কে দূর্ভিসহ করে তুলেছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী যেখানে ইচ্ছে সেখানেই গড়ে তুলছেন ওয়ার্কশপ। ফলে শব্দদূষণে ঘুম হারাম অনেক আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের। শব্দদূষণ ও ওয়ার্কশপ স্থাপনের নীতিমালা থাকলেও বাস্তবে প্রয়োগ নেই কোনোটির।
বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী, ১৫ বছর বয়সের নিচে জনসংখ্যার মধ্যে শ্রুতি প্রতিবন্ধীর মাত্রা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ২.৫ শতাংশ বেশি। এভাবে শব্দ দূষণের মাত্রা অব্যাহত থাকলে শিশুদের
মধ্যে বধিরতার হার ক্রমাগত বাড়াতে থাকবে। এবং আগামী দিনের কর্ণধার শিশু লেখাপড়ায় অমনোযোগী ও
মানবিক বিকাশের পথ পরিক্রমা বন্ধ হয়ে বিকারগ্রস্ত হবে।
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, অপ্রীতিকর শব্দ এমনকি সজারু প্রীতিকর শব্দ যদি কর্মক্লান্ত প্রহর শেষে কাউকে দীর্ঘদিন ধরে যন্ত্রণা দিতে থাকে তাহলে মারত্মক রকমের মানসিক সমস্যায় নিপতিত হবে। ব্যক্তি এমনকি আক্রমনাত্মক আচরণ ও দেখা দিতে পারে। ঘুম না হওয়ার কারণে কর্ম ক্ষমতা, সৃজলশীল প্রতিভার ব্যাঘাত ঘটে থাকে।
শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ অনুযায়ী, আবাসিক এলাকায় সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ শব্দসীমা হলো ৫৫ ডেসিবেল এবং রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৫ ডেসিবেল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৬০ ডেসিবেল শব্দে মানুষের সাময়িক শ্রবণশক্তি নষ্ট হতে পারে। ১০০ ডেসিবেল শব্দে চিরতরে শ্রবণশক্তি হারাতে পারে। ওয়ার্কশপে শব্দদূষণের মাত্রা ১১০ ডেসিবেলেরও বেশি।
ট্রেড লাইসেন্স না থাকলেও এসব দোকান মালিককে কখনও জরিমানা কিংবা অভিযানের মুখে পড়তে হয়নি। এ কারণে গ্যারেজ মালিকরা সিটি কর্পোরেশনের নীয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র ওয়ার্কশপ স্থাপন করছে। এছাড়া অন্যান্য দোকান থেকে ভাড়া ও জামানত বেশি হওয়ায় জায়গার মালিকরা ওয়ার্কশপ ভাড়া দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নুরী, ভোরের দর্পন কে বলেন, পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া যারা অবৈধ ভাবে আবসিক এলকায় ব্যবসা করছেন তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে, বাণিজ্যিক এলাকায় হলে তাদেরকে পরিবেশের ছাড়পত্র নিয়ে ব্যবস্যা করতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম জানান, সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্সবিহীন তারা কিভাবে ব্যবসা করছেন সেটা দেখেই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।