ঢাকা

জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মুকসুদপুরে ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন

  প্রতিনিধি ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৫:৪৫:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মিয়া (বর্তমানে যৌথ বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়ে গোপালগঞ্জ কারাগারে রয়েছেন), সাংবাদিক হায়দার খান (ফরিদপুর) ও মিলন খন্দকার গং – দের দৌরাত্ম্যের হাত থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন লোহাইড় গ্রামের ভুক্তভোগীরা। 

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন লোহাইড় গ্রামের ওই সকল ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবার- পরিজন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত খ্যাতিমান সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত মাস্টার আরজু মোল্লার ছেলে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ মোস্তফা জামাল।

এসময় ভুক্তভোগী ইবাদত মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, জমি সংক্রান্তে পূর্ব বিরোধ এবং মহারাজপুর ইউপি নির্বাচনে ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে সমর্থন করার জেরে চেয়ারম্যানের সাথে আমাদের শত্রুতা বেড়েছে। মুকসুদপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান কাবির মিয়া সহ সমাজের গণ্যমান্য- ব্যক্তিবর্গ সালিশ বৈঠকে বসে এ বিষয়ে মীমাংসা করে দেন। সালিশ বৈঠকে প্রতিপক্ষ সিদ্ধান্ত মানলেও পরবর্তীতে প্রতিপক্ষ তা না মেনে আমাদের বাড়ি-ঘর ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। প্রতিবাদ করলে আমাদেরকে মারধর করে আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে চলেছে। ইতোমধ্যেই কিছু মামলার রায় বের হয়েছে, যা আমাদের পক্ষে গিয়েছে।  এদিকে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহচর কথিত সাংবাদিক হায়দার খানের শ্বশুর ভূমিদস্যু ইকবাল মোল্লা আমাদের প্রতিপক্ষ। তার সাথে আমাদের জমি সংক্রান্তে পূর্ব বিরোধ রয়েছে। এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু ইকবাল মোল্লাকে সেনা ক্যাম্পে ডেকে পাঠালেও তিনি কৌশলে ক্যাম্পে যাননি। কথিত ওই সাংবাদিক পতিত সরকারের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রভাব খাটিয়ে অন্যায় ভাবে মুকসুদপুর থানার সাবেক ওসি আশরাফুল আলম সাহেবকে তার শ্বশুরের পক্ষে কাজ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। যদিও বা ৫ আগস্ট এর পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রসমাজ ও বিক্ষুব্ধ জনতা অবৈধ আয়ে ফরিদপুরে নির্মিত কথিত ওই সাংবাদিকের বহুতল বিশিষ্ট বিলাসবহুল ভবন ভাঙচুর করেছে বলে শুনেছি। এছাড়াও কৃষি বিভাগে কর্মরত মিলন খন্দকার নামের অপর অভিযুক্ত আমাদেরকে খুন করার হুমকি-ধমকি দিয়ে চলেছে। মিলন খন্দকার আমাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বলে জিলাল হত্যাকাণ্ডে কি হয়েছে? আমি যেহেতু সরকারি চাকরি করি, আমার না হয় চাকুরি যেতে পারে, ১৫/২০ দিন পরে এমনিই জামিন হয়ে যাবে। গ্রামে এ ধরনের অমানবিক কর্মকাণ্ডে দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন-যাপনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছি। আমরা আপনাদের (গণমাধ্যমে) মাধ্যমে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট আমাদের জীবনের পূর্ণ নিরাপত্তা, সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন- যাপনের পূর্ণ নিশ্চয়তা চাইছি।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, বিগত ইউপি নির্বাচনে তারা বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কাজ করেন। এরপর সালাউদ্দিন মিয়া চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাবলে বলিয়ান হন। তিনি এলাকায় লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে তাদের ওপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন এবং গ্রামের বিভিন্ন নিরীহ লোকের জমিজমা দখল করেছেন।

তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, কিশোর গ্যাং দিয়ে এলাকায় বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট ও চাঁদাবাজী করেন। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মজিবর খন্দকার ও তার ছেলে মিলন খন্দকার দলের ক্ষমতা দেখিয়ে বিভিন্ন সময় বাড়ী ঘর ভাংচুর করে লুটপাট চালিয়েছেন। এতে ভুক্তভোগী সহ গ্রামবাসীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অনেকেই জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে বর্তমানে শংকিত রয়েছেন। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা ও তাদের পরিবার- পরিজন।

এ সময় লোহাইড় গ্রামের মুরব্বি করিম খাঁন, ছিদ্দিক খন্দকার, রবিউল খাঁন, সিরাজ খান, গুলজার খান, ফিরোজ খান, নুরু খান, আমানত খান সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও জেলায় ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর

Sponsered content