বরিশাল

ঝালকাঠিতে স্বামী-সন্তানহীন এক বৃদ্ধার করুন আর্তনাদ

  প্রতিনিধি ১৮ নভেম্বর ২০২০ , ৬:৫৬:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পুটিয়াখালী গ্রামের মীরেরহাট সংলগ্ন স্বামী-সন্তানহীন বৃদ্ধা বিধবা পারুল বেগমের করুন আর্তনাদ আমার কেউ নাই, আল্লাহ যেভাবে খাওয়ায় সেভাবেই খাই! বয়সের ভারে নিস্তেজ হয়ে পড়েছেন, নিজের বয়স কতো তাও জানেন না। স্বামী মারা গেছেন কতো বছর আগে তাও সঠিক বলতে পারছেন না। দাম্পত্য জীবনে নেই সন্তান। শ্বাসকষ্টের রোগী হয়েও তিনি খুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। মানুসের কাছে হাত পেতে যা পাচ্ছেন তা দিয়ে বাজারে গিয়ে সামর্থ অনুযায়ী কেনাকাটা করে যেভাবে পারছেন রান্না করছেন। খুপড়ি ঘরের টিনের চালা থেকে বৃষ্টি হলেই পড়ে পানি। এতো অভাব-অনটন এবং প্রতিকূলতার মধ্যেও ঘরটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে যেটুকু কাপড় আছে তা পরিধান করে নিজেকেও রাখছেন পরিপাটি। বলছিলাম রাজাপুর উপজেলার পুটিয়াখালী গ্রামের মীরেরহাট সংলগ্ন স্বামী- সন্তানহীন বৃদ্ধ বিধবা পারুল বেগমের কথা। পারুল বেগমের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ৩০/৪০ বছর আগে স্বামী মারাগেছেন। পেটে কোন সন্তানই হয়নি। বেসরকারী একটি সংস্থা থেকে একটি গরু দিয়েছিল, তা লালন পালন করে বড় করার পরে বিক্রি করে খুপড়ি ঘরটি তৈরী করি। টিনের চালার ফাকা দিয়ে পানি পড়ে খাডালে (ফ্লোরে) কিছু নাই। শ্বাসকষ্ট, প্রেসার, গ্যাস্ট্রিকসহ অনেক রোগ বাসা বেধেছে শরীরে। যদি পারি দুটো চাল রান্না করি, তরকারী মানুসের কাছ থেকে চেয়ে আনি। যেভাবে পারি সেভাবে নিজে নিজে রান্না করে খাই। কখনও খেয়ে আবার কখনও না খেয়েও থাকি। যখন বেশি অসুস্থ থাকি তখন পাশে চাচাতো ভাই’র ঘর থেকে খাবার দিয়ে যায়। আল­াহ যেভাবে খাওয়ায় সেভাবেই খাই। পারুলের কষ্টের কথা বর্ণনা করে আরো জানান, মা বাবা, ভাই, বোন, স্বামী, সন্তান, ঘর কিছুই নাই। ঘরের পাশে আছে চাচাতো ভাই। একখানা বিধবা ভাতা’র কার্ড আছে। শরীর যেভাবে খারাপ থাকে তাতে প্রতিমাসেই ২ হাজার টাকার বিেশ ওষুধে খরচ হয়। যে ঘরে থাকি তাতে বৃষ্টি নামলেই পানি পড়ে সব ভিজে যায়। একটি ঘর হলে রাতে অন্তত একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম। স্থানীয় বেশ কিছু সংখ্যক লোকজন আমাকে জানান, অসহায় বৃদ্ধ পারুল বেগম ভীষণ কষ্টে জীবনযাপন করছেন। তার মা, বাবা, ভাই, বোন, স্বামী, সন্তান, ঘর কিছুই নাই। মাঝে মধ্যে আমরা স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদা তুলে ওষুধের ব্যবস্থা করি। বৃদ্ধা পারুল বেগম’র জীবনের শেষ প্রান্তে এসে একটি ঘরের জন্য আকুতি করছেন। তিনি একটি ঘর পেলে অসহায় ও রোগাক্রান্ত হলেও অন্তঃতপক্ষে রাতে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারতেন।

আরও খবর

Sponsered content