ঢাকা

টাঙ্গাইলে ব্রিজ না থাকায় অর্ধলাখ মানুষের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

  প্রতিনিধি ৪ নভেম্বর ২০২০ , ৫:০২:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নাগরপাড়া ধলেশ্বরীর শাখা নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মিত না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। সেখানে মির্জাপুর, ঢাকার ধামরাই, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া ও নাগরপুর উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ একটি ব্রিজের অভাবে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পোহাচ্ছে।

বর্ষায় আতঙ্কের মধ্যে নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হতে হয়। ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করে মানুষ। নদীর এক পাড়ে রয়েছে নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নতুন কহেলা কলেজ, দুটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল, উয়ার্শী ইউনিয়ন স্থাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র, আতুল্যা বাজার কমিউনিটি ক্লিনিক, উয়ার্শী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, নাগরপাড়া বাজার, কহেলা বাজার ও আতুল্যা বাজার। নদীটির উত্তর পাশে মির্জাপুরের নাগরপাড়া, দাখিলি, নওগা, মৈশামুড়া, মজদৈই, সাফর্তাসহ ১৫ থেকে ২০ টি গ্রাম। দক্ষিণে কহেলা, মোস্তমাপুর, ধামরাইয়ের চৌহাটসহ কয়েকটি গ্রাম।

এছাড়াও নাগরপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের লোকজনসহ মির্জাপুরের উয়ার্শী, মজদই, মৈশামুড়া, নবগ্রামের লোকজনকে ধামরাই ও মানিকগঞ্জে যেতে নদী পার হয়ে দক্ষিণ পারে যেতে হয়। মির্জাপুর উপজেলা সদর, জেলা শহর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য নদীটি পাড়ি দিয়ে নাগরপাড়া বাজারে আসতে হয়। এছাড়াও কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য সময়মতো বাজারে নিতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

নদীর উত্তর পারে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ কিছু যানবাহন পাওয়া গেলেও দক্ষিণ পাড়ে কোনো যানবাহন পাওয়া যায় না। ফলে চরম কষ্টের মধ্যে দিয়ে মানুষের যাতায়াত করতে হয়। নাগরপাড়া ধলেশ্বরী শাখা নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মিত হলে দুই পাড়ের হাজারো মানুষের মধ্যে একটি মেলবন্ধন তৈরি হত। নাগরপাড়া বাজারের কাঁচা তরকারি ব্যবসায়ী ফরিদ আক্তার বলেন, ব্রিজ না থাকায় মামলামাল নিয়ে বাজারে আসা খুবই কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। এতে করে যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে তাছাড়াও সময়ও ব্যয় হচ্ছে।

নাগরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্ষাকালে আতঙ্ক নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়। কলেজের এক ছাত্রী নৌকা ডুবে মারা যাওয়া পর স্কুলে পাঠিয়ে মা বাবা সবসময় ভয়ে থাকে। মোটরসাইকেল আরোহী মোক্তার হোসেন বলেন, বর্ষাকালে নৌকা এবং শুস্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। প্রতিবার পার হতে টাকা গুনতে হয়। খেয়ানৌকার মাঝি আশু আলী বলেন, বর্ষায় নৌকায় পারপার হতে হয়। নদীটিতে পানি কমে গেলে প্রতি বছর বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। তখন ঝুঁকি নিয়ে মানুষ সাঁকোর উপর দিয়ে মোটরসাইকেল রিকশা ভ্যান পারপার করে।

প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক মোটরসাইকেল পারাপার হয়। এ বিষয়ে মির্জাপুরের উয়ার্শী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুব আলম মল্লিক বলেন, ‘নদীতে সেতু না থাকায় লোকজন আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে নদী পরাপার হয়। এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য একাব্বর হোসেনের কাছে ব্রিজ নির্মাণের ডিও চেয়েছি কিন্ত কোন কাজ হয়নি।’ এ প্রসঙ্গে মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, ‘উয়ার্শী নদীর নাগরপাড়া ধলেশ্বরী শাখা নদীর উপর সাতকোটি টাকা ব্যয়ে ১৬০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দ্রæতই প্রস্তাবটির অনুমোদন পাব বলে আশা করছি।’

আরও খবর

Sponsered content