প্রতিনিধি ১১ অক্টোবর ২০২৫ , ১:০০:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা আবারও তীব্র আকার ধারণ করেছে। আগামী মাস থেকে চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নিজস্ব সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে তিনি এই ঘোষণা দেন। ট্রাম্প বলেন, চীনের অবিচারপূর্ণ বাণিজ্যনীতি ও প্রযুক্তি খাতে আগ্রাসী আচরণের জবাব দিতে যুক্তরাষ্ট্র আর নীরব থাকবে না।
তিনি আরও জানান, গুরুত্বপূর্ণ কিছু সফটওয়্যার রপ্তানির ক্ষেত্রেও নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। এর আগে একই প্ল্যাটফর্মে আরেকটি পোস্টে ট্রাম্প চীনের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিরল খনিজ রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে চীন এখন বিশ্ববাজারকে জিম্মি করার চেষ্টা করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে “শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপ”।
এ সময় তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিলেরও হুমকি দেন। তবে পরে ট্রাম্প জানান, বৈঠকটি এখনও ‘চূড়ান্তভাবে বাতিল হয়নি’, যদিও আলোচনাটি আদৌ হবে কি না, তা অনিশ্চিত। চীনের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন দেখা দেয়। বিশেষ করে প্রযুক্তি ও গাড়ি খাতের শেয়ারের দামে উল্লেখযোগ্য পতন ঘটে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের বিরল খনিজ রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। এসব খনিজ গাড়ি, স্মার্টফোনসহ উচ্চপ্রযুক্তি পণ্যের অপরিহার্য উপাদান। চলতি বছরের শুরুর দিকে ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের হুমকি দিলে বেইজিং বিরল খনিজ রপ্তানিতে কড়াকড়ি আনে। এর ফলে মার্কিন শিল্পখাতে বিপর্যয় দেখা দেয়; এমনকি গাড়ি নির্মাতা ফোর্ড কয়েক দিনের জন্য উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।
একই সময়ে চীন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কোয়ালকম-এর বিরুদ্ধে একচেটিয়া ব্যবসার অভিযোগে তদন্ত শুরু করে, যার ফলে কোম্পানিটির নতুন একটি চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। সম্প্রতি চীন ঘোষণা দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-সম্পৃক্ত জাহাজ থেকে নতুন বন্দর ফি আদায় করা হবে, যার আওতায় মার্কিন কোম্পানিগুলোর জাহাজও পড়বে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গত মে মাস থেকে দুই পরাশক্তির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি শুরু হলেও সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে— ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে নতুন এক বাণিজ্যযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বিশ্ব।





