প্রতিনিধি ২২ ডিসেম্বর ২০২১ , ৭:৪৮:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, অচিরেই ডাকসু নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। নির্বাচন আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনকে আমি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলব, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করলে চেয়ার হারাতে হবে; হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি। ডাকসু নির্বাচন দিতেই হবে।
ডাকসুতে হামলার দুই বছর পূর্তি ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী নির্যাতনের প্রতিবাদে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ডাকসু হামলার কথা উল্লেখ করে নুরুল হক নুর বলেন, ভারতের বিতর্কিত এনআরসি-সিএএ বিলের প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনার বিরুদ্ধে আমরা কথা বলছিলাম। তথাকথিত ভুঁইফোড় সংগঠন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগ মিলে ডাকসুতে আমাদের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছিল।
গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুর বলেন, সেদিন তাৎক্ষণিক ভিসি-প্রক্টরকে জানালেও তারা কর্ণপাত করেননি। সরকারের উচ্চ মহল থেকে আশ্বাস দিলেও সে হামলার বিচার আমরা আজও পাইনি। এটি কোনো সাধারণ ঘটনা ছিল না। ভারতীয় এজেন্টদের ইন্ধনেই এ হামলা হয়েছিল।
তিনি বলেন, একসময় ছাত্রলীগের ইতিহাস ঐতিহ্য ছিল; কিন্তু বর্তমানে ফাঁকা। গত বিশ বছরে ছাত্রলীগ এমন একজন গ্রাজুয়েট বের করতে পারেনি, যিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। কিন্তু বিশ বছরে ছাত্রলীগের খুন-সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি এমন হাজার হাজার অপকর্মের হিসাব দেওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ নামক মেশিনে ঢুকলে মেধাবী শিক্ষার্থীরাও খুনিতে রূপান্তরিত হন। তাই এ মেশিনকে আগে আমাদের ধ্বংস করতে হবে। সব অপকর্মের ডকুমেন্টারি তৈরি করে ছাত্রলীগকে আন্তর্জাতিকভাবে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লার সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাকিল মিয়ার সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন, ছাত্র অধিকার পরিষদ সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম, ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আসিফ মাহমুদ প্রমুখ।
২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ডাকসু ভবনে সহ-সভাপতির কক্ষের বাতি নিভিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ নুর ও তার সঙ্গীদের। হামলায় নূরসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন৷ হামলার আগে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও সেখানে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
হামলার ঘটনা তদন্তে পরদিন ২৩ ডিসেম্বর কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবু মো. দেলোয়ার হোসেনকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছয় কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হলে এখনো তা দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি।