প্রতিনিধি ২৮ মার্চ ২০২৪ , ৫:৩৪:১০ প্রিন্ট সংস্করণ
আরসার প্রধান কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি সহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলার নথি বিচারিক আদালতে (জেলা ও দায়রা জজ আদালত) প্রেরণ।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে মাদক বিরোধী অভিযানে, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (ডিজিএফআই) কর্মকর্তা বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী হত্যা মামলা দায়েরের দুই বছরের মাথায় মামলাটি বিচারিক আদালতে(জেলা ও দায়রা জজ) প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আমলী আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন।
এই মামলায় অভিযুক্ত ৫০ জনের মধ্যে ১৪ জন কারাগারে থাকলেও ৩৬ জন আসামি এখনো পলাতক।গত ২৭ মার্চ বুধবার বান্দরবান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে তিনি এই নির্দেশনা প্রদান করেন,এই নির্দেশনার মধ্য দিয়ে পলাতক আসামিদের অনুপস্থিতিতেই চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার বিচার কার্য চলবে।
ইতিপূর্বে চলতি বছরের গত ২১শে মার্চ বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এই মামলায় পলাতক প্রধান আসামি আরসার প্রধান কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি সহ ৩৬ জন আসামিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ প্রদান করে অন্যথায় বিধি মোতাবেক তাদের অনুপস্থিতিতেই মামলার বিচারকার্য পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়ে পত্রিকা বিজ্ঞপ্তি জারি করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান কোর্ট ইন্সপেক্টর একে ফজলুল হক জানান,এই মামলায় গত বছরের ১৩ই নভেম্বর ৫০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদলত। ১৪ জন কারাগারে আছেন। এর মধ্যে ১। মাস্টার দিল মোহাম্মদ, ২। জামাল হোসেন, ৩। মো. সাইফুল্লাহ, ৪। হাফেজ এহসান, ৫। সোহাইল, ৬। ফয়েজুল ইসলাম, ৭। নোমান চৌধুরী, ৮। রমজান আলী বান্দরবান জেল হাজতে আটক আছে।
অপর ৬ জন অভিযুক্ত ১। মো. জোবায়ের, ২। নুর মোহাম্মদ, ৩। দীল মোহাম্মদ প্রকাশ হাফেজ বেলাল(৩২), ৪। নূর কামাল প্র. সমিউদ্দিন(৩৪),৫। রহিমুল্লাহ প্রকাশ মুসা (৩৬), ৬। মো. ওসমান ওরফে সালমান (৫০)’ কক্সবাজার জেল হাজতে আটক আছে।
প্রসঙ্গত ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর ঘুমধুম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের তুমব্রু বাজার সংলগ্ন কোনারপাড়া গ্রামে মায়ানমারের আরসা ও আল ইয়াকিন গ্রুপের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাব মাদকবিরোধী যৌথ অভিযান চালায়।অভিযানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি আক্রমণের ফলে অভিযানে থাকা রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী নৃশংসভাবে হত্যা এবং একই সাথে র্যাব সদস্য সোহেল বড়ুয়াকে গুরুতর আহত করা হয়।
গুলি করে গোয়েন্দা সংস্থার (ডিজিএফআই) কর্মকর্তা বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী হত্যার ঘটনায় মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আমির আতাউল্লাহ জুননি সহ শূন্যরেখার আশ্রয়শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান ও রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার দিল মোহাম্মদ, সেক্রেটারি মৌলভি আরিফ, আরসার আঞ্চলিক কমান্ডার ওস্তাদ খালেদ, মৌলানা মোস্তফা, আবদুর রহমান, আরসা সদস্য জুবায়ের, শাকের কাউসার, নোমান চৌধুরী, জিন্নাত উল্লাহ, লাল মোহাম্মদ, হাফিজ নুর, রহিম উল্লাহ, মৌলভি আজিজ সহ ৫১ জনের বিরুদ্ধে গত বছর ২৩ নভেম্বর রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ডিজিএফআই কক্সবাজার কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যা মামলার প্রধান আরসার প্রধান কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির সাথে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বোঝাপড়া রয়েছে ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামিরা কোথায় অবস্থান করছেন নিশ্চিত হওয়া না গেলেও ক্যাম্পে (উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে) তাদের শক্তিশালী বাহিনী আছে।
সূত্র বলছে যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেটভিত্তিক মাধ্যম ব্যবহার করে আরসা। আশ্রয়শিবিরে চাঁদাবাজি-অপহরণ, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছে প্রতিনিয়ত। আইনশৃঙ্খলা সংস্থা বলছে পলাতক আসামিদের আইনের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।