ভোরের দর্পণ ডেস্ক:
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে আসলেও দেশে ডেঙ্গুর চোখ রাঙানি কিছুতেই কমছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দুই শতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী এই তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ বুধবার ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট রোগী ভর্তি হয়েছে ১৮ হাজার ৭ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৬ হাজার ৯৫৭ জন। এ বছর মৃত্যু হয়েছে ৬৭ জনের। বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৯৮৩ জন। এদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে ৭৭৬ জন এবং বাইরে ভর্তি আছে ২০৭ জন। চলতি মাসের ২৯ দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ৬৫১ জন। এ সময় মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২১ জন। আর চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১৭ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় ১৭৪ জন এবং বাইরে ৪৩ জন। আগেরদিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ২১৯ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় ১৬৭ জন এবং বাইরে ছিল ৫২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রোগী ভর্তি হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে ৪২ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৭ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ জন, মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ৪ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ১২ জন ও সংক্রমণব্যাধি হাসপাতালে একজনসহ মোট ৭৮ জন সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অন্যরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সরকার ৬টি ডেডিকেটেড হাসপাতাল প্রস্তুত করে কিন্তু চারটি ছিল চিকিৎসার জন্য। শেষ পর্যন্ত কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যা হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। ওই বছর আগস্টে সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ৬৩৬ জন রোগী শনাক্ত ও ভর্তি হন। গত বছর আগস্টে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছিলেন মাত্র ৬০ জন। আর চলতি বছর আগস্টে ৭ হাজার ৬৯৮ জন রোগী ভর্তি হন। ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের। গত বছর সাতজনের এবং চলতি বছর ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।