প্রতিনিধি ২২ এপ্রিল ২০২০ , ৬:২৫:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি: অবশেষে তীব্র খরার পর বৈশাখের প্রথম সপ্তাহে টানা বৃষ্টিতে শ্রীমঙ্গলের সবুজ চা বাগান প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তাপদাহ ও খরায় চা বাগানের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশংকা সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু বৈশাখের প্রথম সপ্তাহের বৃষ্টিপাতে সেই আশংকা দ‚র হয়েছে। এতে প্রাণ ফিরে পাওয়া দুইটি পাতা একটি কুঁড়িতে ছেয়ে গেছে চা বাগান। চারদিকে এখন সবুজের সমাহার। চা বিশ্লেষকেরা এই প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাতকে চা বাগানের জন্য উপকারী বলে জানিয়েছেন।
এদিকে করোনা পরিস্থিতিতেও সরকারি সিদ্ধান্তে চা বাগান চালু রাখা হয়েছে। তবে সংক্রমণ ঝুঁকি মোকাবেলায় সামাজিক দ‚রত্বসহ সরকারি সব নির্দেশনা মেনে চা বাগানে স্বাভাবিক কর্মকাÐ চলছে। কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত আর কোভিড–১৯ পরিস্থিতিতে চা বাগান খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে হাজার হাজার কেজি চা পাতা নষ্টের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। শ্রীমঙ্গলে ১ থেকে ২০ এপ্রিল ১০৯ (ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। প্রচÐ খরার পরপরই বৃষ্টিপাতে চা বাগানগুলো সজীবতা ফিরে পায়।
সরেজমিনে মঙ্গলবার শ্রীমঙ্গলের কয়েকটি চা বাগানে দেখা গেছে, নারী চা শ্রমিকরা চা পাতা চয়ন করছে। কর্ম ব্যস্ততা দেখা গেছে বাবু, সর্দার আর চৌকিদারদের।
চলতি বছরের ১ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই পরিসংখ্যান হলো ৩ এপ্রিল ১৩ মিলিমিটার ১২ এপ্রিল ৩ মিলিমিটার ১৬ এপ্রিল ৯ মিলিমিটার ১৭ এপ্রিল ৪৩ মিলিমিটার ১৮ এপ্রিল ২৪ মিলিমিটার এবং ১৯ এপ্রিল ১৭ মিলিমিটার।
বাংলাদেশ চা সংসদের সিলেট শাখার চেয়ারম্যান ও ফিনলে টি কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোহাম্মদ শিবলি বলেন, টানা দুই–তিন দিনের বৃষ্টিতে চা গাছে নতুন কুঁড়ি এসেছে। ফলে এরই মধ্যে আমরা পাতা চয়নের কাজ শুরু করে দিয়েছি।
চা বাগান চালু রাখার সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে এই চা বিশেষঞ্জ বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত চা বাগান বন্ধ রেখেছে। আগামী মাসে খোলার কথা রয়েছে। আমরা এই সময়কে কাজে লাগাতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, চা বাগান বন্ধ হলে অভাবনীয় ক্ষতির মুখে পড়তো চা শিল্প। এখনকার কুঁড়ি সময়মতো চয়ন করা না গেলে এই পাতা বুড়ো হয়ে নষ্ট হতো। আর নতুন কুঁড়ির জন্য ৪০–৪৩ দিন অপেক্ষা করতে হতো। এতে করে সার্বিক চা উৎপাদন প্রক্রিয়া কয়েক মাস পিছিয়ে যেত আর বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তো চা শিল্প।
করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় চা বাগানগুলোতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কাজের সময় সামাজিক দ‚রত্ব, সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সরকারি সকল বিধি নিষেধ মেনে চলতে বাগানগুলোতে ওরিয়েন্টেশনসহ রোগপ্রতিরোধ উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।