চট্টগ্রাম

দূর্নীতির আখড়া লাকশিবপুর ফিরোজা বেগম উবি: লাখ লাখ টাকার বানিজ্য ও আত্নসাতের অভিযোগ

  প্রতিনিধি ১৮ এপ্রিল ২০২৩ , ৩:০৭:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ

মাহফুজুর রহমান,চাঁদপুর:

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার লাকশিবপুর ফিরোজা বেগম উচ্চ বিদ্যালয়ে চারটি পদে নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম-জালিয়াতিসহ লাখ লাখ টাকার অর্থ বাণিজ্য ও আত্নসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদালতে চলছে মামলা, অভিযোগ প্রমাণে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে তদন্ত।

ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত ৪ অভিভাবক সদস্যসহ নিয়োগ বঞ্চিত ও সচেতন এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছির উদ্দিন ও সভাপতি আবুল খায়েরের অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে বৈধ ভাবে নিয়োগের জন্য দাবী জানান। এ বিষয়ে প্রশাসন সহ শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিস্ট উর্ধতণ কতৃপক্ষ বরাবর অভিযোগপত্রও জমা দিয়েছেন তারা।

নিয়োগ প্রক্রিয়ার নিয়ামানুযায়ী, নির্ধারিত সময়ে কমিটির সকলের সমন্নয়ে নোটিশ মারফত মিটিংয়ে রেজ্যুলেশন করার নিয়ম থাকলে নোটিশ ছাড়াই ৪ জন নির্বাচিত প্রতিনিধিকে বাদ দিয়ে গোপনে কার্যক্রম পরিচালনা করে নিয়োগ কার্যক্রমে কালক্ষেপণ করায় জনমনে ক্ষোভ ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

এদিকে চাকুরীর আশ্বাসে কাউসার আলম নামের এক নিয়োগ প্রার্থীর কাছ থেকে সাড়ে ৮ লাখ হাতিয়ে নিয়েও চাকুরী না দেওয়ায় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ স্থগিত চেয়ে ৯ মার্চে আদালতে মামলা করেন ওই নিয়োগ প্রার্থী। যার মামলা নং-৬৭/২০২৩

কাউসার জানায়, চাকুরী দেওয়ার নাম করে আমার থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। আমার থেকেও অন্যজন বেশি দিয়েছে তাই আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।আমি আদালতে মামলার মাধ্যমে এর সমাধাণ চেয়েছি।

জানা যায়, অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, ল্যাব-অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মী ও পরিচ্ছনতা কর্মী পদে চার ব্যক্তির কাছ থেকে নিয়োগের কথা বলে ২১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়।

অভিযোগকারী ও বিদ্যালয় অভিভাবক সদস্য শরীফুল ইসলাম, গাজী খোরশেদ আলম, মাহফুজুর রহমান শিপন ও মৌসুমী আক্তার জানান, অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমাদের নিয়োগ পরীক্ষার পর আর কোনো কিছুই অবগত করেননি। মিটিং ছাড়াই গোপনে আগে থেকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যুৎসাহী সদস্য শরীফ মিয়াজীর শ্যালককে নিরাপত্তা কর্মী পদে ও অভিভাবক সদস্য জহিরুল ইসলাম স্বপনের ভাতিজিকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগের পাঁয়তারা করছেন। বিষয়টি কেউ যেন না জানে সেজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে কয়েকজনের স্মাক্ষর নিয়ে নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।’

অভিযোগকারীরা জানান, সম্প্রতি কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে কোনো আলোচনা বা মিটিং না করে গোপনে এভাবে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।

অনিয়মের আখড়া হিসেবে পরিচিত এই প্রতিষ্ঠানটির অপকর্ম শুধু তাই নয়, পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, গাইড বই বানিজ্য সহ বিদ্যালয়ের নানান তহবিল তসরুপের অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে অসংখ্য শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের হস্তক্ষেপে মার্কশীট বাবদ নেওয়া অতিরিক্ত টাকা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছির উদ্দিন।

এদিকে অভিযুক্ত সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে কয়েকবার ফোন দিলেও ব্যস্ততা দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান তারা। পরে ফোন দিলেও আর রিসিভ করেননি তারা।

আর দূর্নীতির আভাষ পেয়েছেন জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলী রেজা আশরাফী বলেন, আমি সরজমিনে তদন্তে গিয়েছিলাম। সেখানে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি অনেকেই সমর্থন করেছেন। যেহেতু মামলা হয়েছে, বিষয়টি তদন্তদিন রয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content