প্রতিনিধি ২৬ অক্টোবর ২০২০ , ৪:৫৪:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
বাবুল ইসলাম, ধুনট (বগুড়া) :
বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকার সরকারপাড়া ইছামতি নদীর তীরে একশ’ বছরের বেশি সময় ধরে বসছে বউ মেলা। অনেক আবেগ এবং গভীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এই মেলা। অনেকদিন ধরে দেখা হয়নি যাদের সাথে এইদিন তাদের সাথে দেখা করার সুযোগ মেলে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দূর্গাপুজাকে ঘিরে ‘বউমেলা’ নামে ব্যতিক্রমী এই মেলা বসেছে।
মেলায় আসা মানুষের ৯৫ শতাংশই নারী। এ জন্য স্থানীয়ভাবে এটি বউ মেলা নামে পরিচিত। মেলায় সব ধর্মের মানুষের মহামিলন ঘটে। কেবল পূজার ধর্মীও অনুসঙ্গই নয়, মেলা যেন হয়ে ওঠে সার্বজনীন আনন্দ-বিনোদনের একটি অংশ। মেলায় সা¤প্রদায়িক সম্প্রীতির এক গভীর মেলবন্ধনের সৃষ্টি হয়।
সোমবার দুপুরের দিকে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, পণ্যের পসরা নিয়ে এসেছেন নানা গ্রামের ব্যবসায়ীরা। মিষ্টান্ন, শিশুতোষ খেলনা, চুড়ি, দুল, ফিতা, আলতা থেকে ঘর গৃহস্থালির বিচিত্র জিনিস। জিলাপি ভাজা হচ্ছে ২০টিরও বেশি দোকানে। মেলাটি শুধু মেলা প্রাঙ্গনেই সীমিত নয়, এ উপলক্ষে জামাতা ও আত্মীয়স্বজনকে আমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করার রেওয়াজও যথারীতি চলেছে। বাড়িতে বাড়িতে বানানো হয়েছে খই, মুড়কি, নারকেল ও চিড়া-মুড়ির নাড়–।
মেলাটির আয়োজক কমিটির সভাপতি শ্রী সুধীর সরকার বলেন, প্রতিমা বির্সজনের দিন মেলাটি হয়ে থাকে। এ জন্য আগাম কোন ঘোষনা দেওয়া হয় না। এক’শ বছরের বেশী সময় ধরে এইদিনে মেলাটি বসছে। দুরদুরান্তের মানুষ এখনো আসছে মেলার আনন্দ নিতে। সে কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব রকমের সুবিধা রাখতে আয়োজক কমিটি প্রস্তুতি নিয়ে থাকে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগে থেকেই যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। তাছাড়া হাজারো মানুষের নিরাপত্তার জন্য সারাদিন পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
ধুনট পৌরসভার মেয়র এজিএম বাদশা বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলার ইতিহাস ধরে রাখতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে সরকারপাড়া গ্রামের মানুষ। প্রতিবছর তারা স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে অব্যাহত রেখেছেন এই মেলাটির আয়োজন।