প্রতিনিধি ২০ মার্চ ২০২১ , ৭:৩৪:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ
নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা। আর এ উপজেলার সবুজ ফসলের মাঠে হলুদের হানা এ যেন এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। ফুলে ফুলে মৌমাছি আর প্রজাপতির মিতালী। প্রকৃতিপ্রেমী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হুমড়িপড়া ভিড়ে অনেকেই হচ্ছেন সেলফি বন্দি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহায়তায় কৃষিপুনর্বাসন, প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ৪শ ৫০জন কৃষককে বিনামূল্যে সার ও বীজ প্রদানের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো উচ্চ ফলনশীল আরডিএস জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে এ ফসল ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিশ্ব বাজারে ভোজ্যতেলের ব্যাপক চাহিদা সয়াবিন, সরিষার তেলের ঘাটতি পূরণে সূর্যমুখী চাষের গুরুত্ব অপরিসীম। এ লক্ষ্যে কৃষিবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী পদক্ষেপে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে দিন দিন বাড়ছে সূর্যমুখীর চাষ। কম সময়ে স্বল্প খরচে অধিক লাভে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা। স্থানীয় কৃষকরা জানান, সরকারী পৃষ্টপোষকতা আরো বৃদ্ধি করে আন্তর্জাতিক বাজার সৃষ্টি করা হলে সূর্যমুখী চাষে মানুষ আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বাবু জানান, অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম, লাভ বেশি হওয়ার কারণে সূর্যমুখী চাষ করছি। উপজেলা কৃষি উপসহকারী আব্দুল লতিফের পরামর্শে চলতি বছর আমি ১ একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছি। এক বিঘা জমি থেকে উৎপাদিত বীজ থেকে আয় হবে ২০ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকা ।
নিতাই ইউনিয়নের পানিয়াল পুকুর খোলা হাটি গ্রামের কৃষক গৌসুল আজম বলেন, এ বছর আমি ৩০ শতক জমিতে সুর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। এতে খরচ হবে ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা। সেখানে কৃষি অফিস বিনামূল্যে বীজ ও সার দিয়েছে ফলে তার খরচ হয়েছে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা । প্রাকৃতির দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে খরচ বাদে এক বিঘা জমিতে ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা আয় হবে আশা করছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, কৃষি পুনর্বাসন, প্রণোদনার আওতায় চলতি বছর ৫০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের প্রচুর ঘাটতি পূরণে বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। সে কারণে আমাদের দেশের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যায়। সরকার সেটি নিরসনের লক্ষে প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে এর চাষ শুরু করেছে।