চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয়েছে। গত ২৭ জুলাই মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করে।
মামলার অপর তিন আসামি লিপি আক্তার, সুমি আক্তার ও নাজমা আমিন স্নিগ্ধাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে চার্জশিটে। নাসির ও অমির সঙ্গে এদেরকেও এই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিমানবন্দর থানার দায়িত্বরত সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এসআই মো. ফরিদ মিয়া জানান, গত ২৭ জুলাই অভিযোগ পত্র দাখিল করেছে ডিবি। আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে বন্ধ থাকায় অভিযোগপত্রটি আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি। আগামী রবিবার উপস্থাপন করা হবে। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করলে মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হবে।
ফরিদ আহমেদ আরও জানান, আসামি নাসির ও অমির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর টেবিল ২৪ (ক), ১০ (ক) এবং ৪১ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। নাসির ও অমির তিন নারী সঙ্গীর বিষয়ে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘উদ্ধারকৃত মাদক দ্রব্য সম্পর্কে এই তিনজন কিছুই জানতেন না। সাক্ষ্যপ্রমাণে তিন নারী আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হল।’
গত ৮ জুন রাতে ঢাকার মিরপুর বেড়িবাঁধের ঢাকা বোট ক্লাবে অমির সঙ্গে যান চিত্রনায়িকা পরীমণি। ওই ক্লাবে গেলে নাসির উদ্দিন, অমি ও অজ্ঞাতনামা চারজন পরীমণিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তার শ্লীলতাহানি করেন। তাঁকে মারধর করেন। হত্যার চেষ্টা চালান বল পরীমণি অভিযোগ তোলেন। গত ১৪ জুন সাভার থানায় পরীমণি নাসির ও অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ওই দিন দুপুরে উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে আলোচিত ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ এই নারীদের আটক করা হয়। আটকের সময় ওই বাসা থেকে চার বোতল বিদেশি মদ, বিভিন্ন ব্রান্ডের মদের খালি বোতল ও এক হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
ওই দিন রাতে ডিবির গুলশান জোনাল টিমের উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সিকদার বাদী হয়ে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর নাসির-অমিসহ তিন নারীকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে নাসির ও তিন নারীকে জামিন দেওয়া হয়। এই মামলায় আমি এখনো কারাগারে আছেন। গ্রেপ্তারের পর অমির বিরুদ্ধে মানব পাচার ও প্রতারণার অভিযোগে আরও কয়েকটি মামলা হয়।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, রাজধানীর উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের বাসায় মাদকের আসর বসাতেন নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমি। ওই বাসায় নিয়মিতই চলত ইয়াবা ও বিদেশি মদ নিয়ে ‘আমোদ-ফুর্তি’। পরীমণির মামলার পর আসামি নাসির ও অমি উত্তরার ওই বাসায় আত্মগোপন করেছিলেন।