প্রতিনিধি ২৩ জুন ২০২৪ , ৪:২৬:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ
বগুড়া শহরে ঈদের রাতে জোড়া খুনের সুরাহা না হতেই তুচ্ছ ঘটনায় ইউনুস আলী (৫০) নামে এক মুরগির খামারিকে ড্রেনে চুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (২২ জুন) রাতে সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়নের বালা কৈগাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে। সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুজ্জামান শাহিন এ তথ্য দিয়েছেন।
স্বজন ও গ্রামবাসীরা জানান, নিহত ইউনুস আলী বগুড়া সদর উপজেলার শেখেরকোলা ইউনিয়নের বালা কৈগাড়ি গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি মুরগির খামারি ছিলেন। শাহীন নামে তার এক মানসিক অসুস্থ ছেলে রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার গ্রামের রাস্তায় প্রতিবেশী ওহাব আলীর স্ত্রীর সঙ্গে শাহীনের ধাক্কা লাগে। বাড়ি ফিরে ওই নারী ‘তার শরীরে হাত দেওয়া হয়েছে’ বলে স্বামী ওহাব আলীর কাছে অভিযোগ করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার বিকালে ওহাব আলী ও তার লোকজন শাহীনকে মারধর করেন।
এ ঘটনায় সন্ধ্যার পর ইউনুস আলী ও তার অপর ছেলে গোলাম রসুল প্রতিবাদ করতে যান। তখন তাদের মারপিট করে আটকে রাখা হয়। রাত ৯টার দিকে ওহাব আলী ও তার লোকজন ইউনুস আলীকে মারধরের পর পা দিয়ে মাথা ড্রেনের কাদার মধ্যে চেপে ধরে চুবিয়ে হত্যা করে। এ সময় কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।
প্রকাশ্য এ হত্যাকাণ্ডের পরপরই ওহাব আলী ও তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়। সদর থানা পুলিশ এসে ইউনুস আলীর মরদেহ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ছাড়া হত্যায় জড়িত সন্দেহে ওহাব আলীর চাচা নফেলকে (৫৮) আটক করা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুজ্জামান শাহিন জানান, নিহতের গলার নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রতিবেশী ওহাব আলীর সঙ্গে কোনও ঝামেলার জেরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে। জড়িতদের শিগগির গ্রেফতার করা হবে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মেয়েকে উত্ত্যক্তের জেরে তার অভিভাবকেরা গত ঈদুল আজহার মধ্যরাতে বগুড়া শহরের নিশিন্দারা চকরপাড়ায় প্রকাশ্যে গুলি ও কুপিয়ে নোমান আহম্মেদ শরীফ শেখ এবং রুমন ইসলাম নামে দুই কিশোর বন্ধুকে হত্যা করে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ সার্জিল আহম্মেদ টিপু, তার ভাই জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু, বগুড়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি, আদালত ভাঙচুর মামলার আসামি শাহ মো. মেহেদী হাসান হিমুসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। নিহতের মা হেনা বেগম এ মামলা করেন।
পুলিশ মূল হোতা শ্রমিক নেতা মিঠুসহ এজাহারনামীয় চার আসামিকে গ্রেফতার করেছে। আলোচিত জনপ্রতিনিধি কথায় কথায় গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিদাতা টিপু ও হিমু গত ৫ দিনে ধরা পড়েনি। ওই রাতের সিসিটিভির ফুটেজে শ্রমিক নেতা মিঠুকে স্পষ্ট দেখা গেলেও তাকে বাঁচাতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা ইতোমধ্যে মানববন্ধন করেছে। তারা মিঠুকে মুক্তি দিতে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে। অন্যথায় আলোচনার মাধ্যমে সারা দেশ অচল করে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।