প্রতিনিধি ২ অক্টোবর ২০২০ , ২:২৮:২০ প্রিন্ট সংস্করণ
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় সাভারে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নীলা রায়কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান চৌধুরী।
সাত দিনের রিমান্ড চলাকালে বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) মিজানুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নির্মল চন্দ্র ঘোষ।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে মিজান জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে নীলার সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর মিজান প্রায়ই নীলার স্কুলের গেটে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতেন। নীলার সঙ্গে পরিচয়ের দুই মাস আগেই মিজান বিয়ে করেন। বিয়ের পরেও তিনি বার বার নীলাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। কিন্তু নীলা তা প্রত্যাখ্যান করে। বিষয়টি মিজানুর তার বন্ধু সাকিব ও সেলিমকে জানান। তারা মিজানকে বলে নীলা প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে শেষ করতে হবে।
মিজান জানান, লকডাউনের কারণে নীলা বাসা থেকে কম বের হতো। তাই তিনি সুযোগ খুঁজছিলেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে নীলা তার ভাই অলোককে নিয়ে অক্সিজেন কেনার জন্য রিকশায় যাচ্ছিল। এটা দেখে মিজানুর নীলার রিকশা থামায়। কথা আছে বলে মিজান একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সামনে নীলাকে নিয়ে যান। সেখানে প্রেমের প্রস্তাব দিলে নীলা তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে তার সঙ্গে থাকা সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে নীলাকে উপর্যুপরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। সাকিব মিজানুরকে সুইচ গিয়ার চাকুটি দিয়েছিল বলে তিনি জানান। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড শেষে মিজানকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে রাজফুলবাড়িয়া কর্নেল ব্রিকস ফিল্ড এলাকা থেকে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর মিজানের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মিজানুরের বাবা আব্দুর রহমান, মা নাজমুন নাহার সিদ্দিকা ও তার সহযোগী সেলিম পহলান রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে নীলা রায় ও তার ভাইয়ের পথরোধ করেন মিজান। পরে তার ভাইয়ের কাছ থেকে নীলাকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। নীলাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নীলার বাবা নারায়ণ রায় ২১ সেপ্টেম্বর মিজানুর রহমান সাভার থানায় হত্যা মামলা করেন।
নিহত নিলার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার বালিটেক এলাকায়। সে সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনি মহল্লায় অ্যাসেড স্কুলের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।