প্রতিনিধি ১ জুলাই ২০২১ , ৫:১৬:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ
মহামারি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বাত্মক কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহনের সংখ্যা কম থাকলেও অলি-গলিতে জটলা দেখা গেছে। বৃষ্টি আর অফিস বন্ধ থাকায় মূল সড়কগুলোতে মানুষের সমাগম না থাকলেও অলিগলি এবং কাঁচা বাজারগুলোর অবস্থা আগের মতোই। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন। এতে কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানলেও অনেককেই তা মানতে দেখা যায়নি।
সরেজমিনে রাজধানীর পুরানা পল্টন, নয়াপল্টন, কাকরাইল, ফকিরাপুলসহ আশপাশ এলাকা ঘুরে এমনটাই লক্ষ্য করা গেছে।
করোনা সংক্রমণ কমাতে আজ ভোর থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে। মহানগরীতে এটা নিশ্চিত করতে মাঠে অবস্থান করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেয়ায় শহরের মূল সড়কগুলো ফাঁকা দেখা গেছে। তবে ভিন্ন চিত্র ছিলো অলিগলির। সে দিকটায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি না থাকায় চিত্র ছিলো আগের মতোই।
নয়া পল্টন মসজিদ গলিতে গিয়ে দেখা যায় জায়গায় জায়গায় মানুষ। যাদের অনেকেই অকারণে বাসা থেকে বেরিয়েছেন। তিন/চার জন একসঙ্গে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন কাফিল উদ্দিন নামে একজন। তিনি বলেন, ‘ঘরের মধ্যে কতক্ষণ আর বসে থাকা যায়। এক কারণে একটু বেড়িয়েছি। সবার সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়ায় জরুরি আলাপ করছি।’
সেখান থেকে একটু সামনে গেলে আরেক জটলা দেখা যায়। কমপক্ষে ৬/৭ জন। মাস্ক ছিলো না কারো মুখেই। তাদের মধ্যে একজন শাহ আলম বলেন, ‘আমরা সবাই সংবাদ কোম্পানিতে চাকরি করি। থাকিও এক সাথেই। এমনিই বের হইছে।’
এরকম জটলা ছাড়াও গলিগুলোতে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ। আকরাম হোসেন নামে একজন বলেন, ‘ভাই, বের তো হতেই হবে। বাজার না করলে খাবো কি?’
পুরানা পল্টন এলাকার কামাল মিয়া নামে একজন বলেন, ‘পুলিশের গাড়ি আইলে রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়। পুলিশ চলে গেলেই মানুষ রাস্তায় বের হইয়া আসে।’
এদিকে মানুষের ঢল দেখা গেছে ফকিরাপুল গরম পানির গলিতে। বৃষ্টির মধ্যেও প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে মানুষ বের হয়েছেন। মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। কেউ কেউ নামে মাত্র থুতনির নিচে ঝুলিয়ে রেখেছেন মাস্ক।
এখানকার সালমা বেগম নামে একজন বলেন, ‘এখানে পুলিশ আহে নাই। এজন্যই মানুষ মাস্ক ছাড়া বের হইছে। ভিড় করতেছে।’
এছাড়াও আশপাশের কাঁচাবাজারগুলো অনেকটা আগের মতোই দেখা গেছে। ফকিরাপুল বাজারে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই বাজার করছিলেন ওছমান মিয়া। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেভাবে কাজ বন্ধ হইয়া যাইতা আছে। না খাইয়াই মইরা যাইতে হইবো। মাস্ক পইরা লাভ নাই।’
চার-পাঁচজন একসঙ্গে দাঁড়িয়ে সবজি কিনছিলেন। সেখানে রতন মিয়া নামে একজন বলেন, ‘বাজারের অবস্থা যদি এমনই হই তাহলে বিধিনিষেধ দিয়ে লাভ কি? বাজার থেকেই বাড়িতে করোনা নিয়ে যাবে। কোন না কোনভাবে প্রত্যেকটা পরিবারকেই আসতে হয় বাজারে। তাই এখানকার (বাজার) স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা প্রথম জরুরি।’