প্রতিনিধি ৪ নভেম্বর ২০২৫ , ১:৪৯:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে টাইফুন কালমেগি আঘাত হানার পর ভয়াবহ বৃষ্টি ও বন্যায় অন্তত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ের কারণে প্রায় ৩ লাখ ৮৭ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সোমবার গভীর রাতে টাইফুনটি স্থলভাগে প্রবেশ করে। এর পরপরই ঘূর্ণিঝড় ও ভারী বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়ে পড়ে, ঘরবাড়ি ডুবে যায়, অনেকে বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। সেবু ও নেগ্রোস দ্বীপপুঞ্জের দিকে অগ্রসর হওয়া এই ঝড়ে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছিল, আর ঝোড়ো হাওয়ার গতি পৌঁছেছিল ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটারে। সেবুর তথ্য কর্মকর্তা রন রামোস জানান, “বাড়ির ছাদে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধারে আমরা জরুরি সহায়তা চাইছি।” তিনি আরও বলেন, কিছু আশ্রয়কেন্দ্রও পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ২৮ বছর বয়সী ডন ডেল রোজারিও বলেন, “ভোর ৩টার দিকে হঠাৎ পানির উচ্চতা বাড়তে শুরু করে। ভোর ৪টার মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মানুষ ঘর থেকে বের হতেও পারছিল না। আমি ২৮ বছর ধরে এখানে আছি—এমন ভয়ংকর অভিজ্ঞতা আর কখনও হয়নি।”
টাইফুনের আঘাতে বোহোল প্রদেশে গাছ ভেঙে পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় এবং দক্ষিণ লেইতে প্রদেশে ডুবে মারা যান আরেক প্রবীণ ব্যক্তি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে প্রায় ৩ লাখ ৮৭ হাজার মানুষকে জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর আগে, সেপ্টেম্বরে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক মানুষ এখনো তাঁবুতে বসবাস করছেন। নতুন এই টাইফুনে তাদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। রাজ্য আবহাওয়া দপ্তরের বিশেষজ্ঞ চারমাগনে ভারিলা জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ দেশটিতে আরও তিন থেকে পাঁচটি ঝড় আঘাত হানতে পারে। বিজ্ঞানীদের মতে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ফিলিপাইনে ঝড় ও টাইফুনের তীব্রতা ও ঘনত্ব দুটোই ক্রমে বাড়ছে।
ফিলিপাইনে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ২০টি টাইফুন আঘাত হানে, যার বেশিরভাগই দরিদ্র ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়।











