প্রতিনিধি ২৯ মে ২০২০ , ৫:১১:০১ প্রিন্ট সংস্করণ
ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা বাক্তা বাজারে অবরুদ্ধ শিক্ষক পরিবার। শিক্ষক ইউছুফ আলীর স্ত্রী’র পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তিতে থাকার ঘর করতে গিয়ে গৃহবন্দি এই পরিবার। গত ২৮ মে হতে সে ঘরে বন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন–যাপন করছে। এ নিয়ে থানায় ও স্থানীয়ভাবে একাধিক সালিশ দরবার করেও কোন সুরাহা না হওয়ায় থানায় মামলা হয়ে আসামীরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও ভাংচুর চালায় ও হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে গৃহবন্দি পরিবার যেন বাড়ী থেকে চলে যায়। বাড়ী থেকে বের হলেই দখল নিতে পারে জবরদখল কারীরা। বাসা থেকে বের হওয়ার রাস্তাটিও বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
শিক্ষকের স্ত্রী সেলিনা আক্তার কেমন আছে জানতে চাইলে, হাউমাউ করে কেঁদে ফেলে জানান, দুই দিন যাবত আমাকে ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না, আমার চাচাত ভাই–বোনেরা। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে, বাসায় পানি নেই, প্রসাব–পায়খানা করার কোন ব্যবস্থা নেই, ঘরেই জরুরত কাজগুলো করতে হচ্ছে। আমার কাছে কাউকে আসতে দিচ্ছে না, আমাকে বের হয়ে দেখা করতে বলে কিন্তু এখান থেকে বের হলেই তারা বাসা দখলে নিয়ে যাবে। আমি আমার বাপের পৈত্রিক সম্পত্তিতে থাকতে চাই। আমার ২টি সন্তান তারা আমার জন্য কান্নাকাটি করছে। সোনারুবাড়ীর লোকজনের জন্য এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বাক্তা বাজারে সোনারু বাড়ীর মৃত সাহেব আলী মাস্টারের ৫ কন্যা সন্তানের একজন সেলিনা আক্তার। বাবা মারা যাওয়ার পর পরই পাঁচ বোন তাদের হিৎস্যা অনুযায়ী তাদের পাওনা বুঝে নেয়। তাদেরই একজন সেলিনা। সে তার বাপের পৈত্রিক সম্পত্তিতে ফাউন্ডেশন দিয়ে ঘর উত্তোলন করে প্রায় প্রথম তলার কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে গেলে তার জেঠা ও চাচা এবং তাদের সন্তানেরা কাজে বাঁধা প্রদান করে। স্থানীয়ভাবে মিমাংসা না হওয়ায় সেটি মামলা পর্যন্ত গড়ায়। মামলায় একজন আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে পরে ঐ আসামী সহ বাকীরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালায়। সংবাদকর্মীরা সরেজমিনে গেলে তাদের ছবি তুলতে নিষেধ করে।
তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেলিনার দাবী যৌক্তিক। পারিবারিকভাবে যারা বাধা প্রদান করে তারা বেআইনিভাবে ঘরে বন্দি করে রেখেছে। বাঁধা প্রদানকারীরা জানিয়েছেন, চাচার সম্পত্তির ভাগ কন্যারা পেলে, আমরা (চাচাতো ভাই–বোন) কেন পাবো না?
স্থানীয় আ’লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম আকন্দ জানান, সোনারু বাড়ীর লোকজন উশৃংঙ্খল। তবে গৃহবন্দির ঘটনাটি সত্য। ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি মুঞ্জুরুল হক মুঞ্জু বলেন, বিষয়টি আমি অবগত স্থানীয়ভাবে সমাধান করার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।
ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ফজলুল হক মাখন কে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। ফুলবাড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত) শেখ জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, অবরুদ্ধের ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।