প্রতিনিধি ১৫ জুলাই ২০২৪ , ৬:৫১:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্ত্রীকে নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রথম স্বামী আনারুল ইসলাম আনাকে (৫০) হত্যার অভিযোগ উঠেছে দ্বিতীয় স্বামীর বিরুদ্ধে। রোববার (১৪ জুলাই) রাত ১১টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বানিয়াপাড়া গ্রামে মারপিটের ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত আনারুল ইসলাম আনা কয়া ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের মৃত নওশের আলীর ছেলে। তিনি কয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। অভিযুক্ত শাহীন একই এলাকার লুৎফর আলীর ছেলে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে সাবেক ইউপি সদস্য আনারুলের স্ত্রী পাপিয়া খাতুন তার পরকীয়া প্রেমিক শাহিনের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেন। আনারুলের সঙ্গে শাহীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাদের বাড়ি একই এলাকায়। ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় আনারুলের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন শাহীন। আনারুলের স্ত্রী পাপিয়ার সঙ্গে শাহীন পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে পালিয়ে বিয়ে করেন তারা। সেই থেকে ইউপি সদস্যের সঙ্গে শাহীনের দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
পূর্ব বিরোধের জের ধরে রোববার রাতে বানিয়াপাড়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পাকা রাস্তার ওপর শাহিন, শাহিনের চাচা মুক্তার হোসেন, মারুফ, মোস্তাকিন, তজিম উদ্দিন ও আবু বক্কর পরিকল্পিতভাবে আনারুলের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। একপর্যায়ে শাহীন ও তার লোকজন আনারলকে কিল-ঘুসি মেরে গুরুতর আহত করে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার তার মৃত্যু হয়।
কয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ছানোয়ার হোসেন বলেন, আনারুলের বন্ধু ছিল শাহীন। ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় এবং একই এলাকায় দুজনের বাড়ি হওয়ায় শাহীন প্রায়ই আনারুলের বাড়ি যেতেন। একপর্যায়ে আনারুলের স্ত্রী পাপিয়ার সঙ্গে শাহীনের পরকীয়া সম্পর্ক হয়। প্রায় দুই বছর আগে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। এরপর থেকে তাদের দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেই দ্বন্দ্বের জেরে শাহীন ও তার লোকজন গতকাল রাত ১১টার দিকে আনারুলকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুরে তিনি মারা গেছেন।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা বলেন, স্ত্রী নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শাহীন, শাহীনের চাচা মুক্তার হোসেন, মারুফ, মোস্তাকিন, তজিম উদ্দিন ও আবু বক্কর পরিকল্পিতভাবে আনারুলকে হত্যা করেছে। আমরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মারা গেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর যে কোনো ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।