প্রতিনিধি ২৩ নভেম্বর ২০২০ , ৩:২২:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ
সোহরাব বরগুনা সংবাদদাতা: আমতলী উপজেলার, আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন শ্রমিকলীগ সভাপতি নান্নু ডাক্তার ও তার সহযোগীরা দাবীকৃত পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা না দেওয়ায় সরকারী বন্দোবস্ত পাওয়া জমিতে ঘর নিমার্ণ বন্ধ করে দিয়েছে তারা । আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এমন অভিযোগ করেন বন্দোবস্থ পাওয়া জমির মালিক সোহেল রানা, জুয়েল হাওলাদার ও আবু ছালেহ। এতে গত ১০ দিন ধরে ঘর নিমার্ণ কাজ বন্ধ রয়েছে। ঘটনা ঘটেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার গাজীপুর বন্দরে।
জানাগেছে, ২০২০ সালে উপজেলার গাজীপুর বন্দরের চরপাড়া এলাকায় ১ নং খাস খতিয়ানে ১৫৩৮ নং দাগে ব্যবসার জন্য মোঃ সোহেল রানা, জুয়েল হাওলাদার ও আবু ছালেহকে দেড় শতাংশ জমি বন্দোবস্ত দেয় আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভুমি) অফিস। ওই জমিতে ব্যবসার জন্য গত ১১ নভেম্বর তারা ঘর নিমার্ণ কাজ শুরু করেন। নিমার্ণ কাজ শুরুতেই আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন শ্রমিকলীগ সভাপতি মোঃ নান্নু ডাক্তার ও তার সহযোগীরা পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন। তাদের দাবীকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করে সোহেল রানাসহ অন্যরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকলীগ নেতা ও তার সহযোগীরা নিমার্ণ শ্রমিক মজিবর মুন্সিকে মারধর করে কাজ বন্ধ করে দেয়। নিরুপায় হয়ে সোহেল রানা বরগুনা জেলা প্রশাসক জনাব মোস্তাইন বিল্লাহ ও সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। জেলা প্রশাসক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমতলী সহকারী কমিশনার (ভুমি) নিশাত তামান্নাকে নির্দেশ দেন। শ্রমিকলীগ সভাপতি ও তার সহযোগীদের কারনে গত ১০ দিন ধরে নিমার্ণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এদিকে ওই জমির সামনে শ্রমিকলীগ নেতার ভাই পান্নু ডাক্তার ও তার ভাইয়ের ছেলে সোহাগ অস্থায়ী ঘর তুলে জমি দখল করে রেখেছেন।
এ বিষয়ে বন্দোবস্ত পাওয়া জমির মালিক জুয়েল হাওলাদার ও আবু ছালেহ বলেন,বন্দোবস্ত পাওয়ার পরও শ্রমিক লীগ সভাপতি নান্নু ডাক্তার ও তার সহযোগীদের বাধাঁর কারনে কাজ করতে পারছি না। তারা জোরপূর্বক কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
সোহেলা রানা বলেন, শ্রমিক লীগ সভাপতি নান্নু ডাক্তার ও তার লোকজন আমার কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। তাদের দাবীকৃত টাকা না দেওয়ায় ঘর নিমার্ণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ সভাপতি মোঃ নান্নু ডাক্তার চাঁদা দাবীর কথা অস্বীকার করে বলেন, ওই জমিতে পূর্বে ডাকঘর ছিল। তাই কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমার ভাই ও ভাইয়ের ছেলে যে ঘর তুলেছে তা প্রয়োজনে ভেঙ্গে ফেলা হবে।
আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) অফিসের সার্ভেয়ার ইকবাল হোসেন বলেন, যথা নিয়মে ওই জমি তিন জনকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে। তাদের ওই জমিতে ব্যবসার জন্য ঘর নিমার্ণের নির্দেশ দেয়া হয়।
আঠারোগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ বলেন, সরকারী জমি সরকার ডিসিআর দিয়েছে এখানে কোন ব্যক্তির হস্তক্ষেপ থাকার কথা না। নান্নু ডাক্তার কিভাবে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়।
গাজীপুর ফাড়ির ইনচার্জ (ওসি) হালদার অর্পিত ঠাকুর বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) নিশাত তামান্না বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।