প্রতিনিধি ১৪ মে ২০২০ , ৩:৫১:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ
বাগেরহাট প্রতিনিধি : করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে লোকজনকে ঘরে রাখতে বাগেরহাট জেলা শহরে যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা বাসা–বাড়ীতে ক্রয়মূলে পৌছে দিচ্ছেন বিষমুক্ত তাজা সাক–সবজি, মাছ–মাংশসহ চাহিদামতো খাদ্যদ্রব্য। বাগেরহাট রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের হটলাইনে ফোন করলেই দ্রুত রোগীদের হাতে পৌছে যাচ্ছে তাদের প্রয়োজনিয় ওষুধ। বিদ্যুতের ডিজিটাল মিটারের বিল রিচার্জ করাসহ ব্যাংক লেনদেনও করে দেয়া হচ্ছে।
করোনাকালে বাগেরহাট রেডক্রিসেন্টের যুব ইউনিটের সদস্যরা নিজেরা করোনাভাইরাস আক্রান্তের ঝঁকি মাথায় নিয়ে শহরবাসিকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। যুব রেডক্রিসেন্ট সদস্যদের ব্যতিক্রমি এই উদ্যোগটি সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছে।
বাগেরহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ আবুল হাসেম শিপন জানান, বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস, বন্যার মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পাশে দাড়িয়ে থাকেন রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কোভিড– ১৯ নামে অদৃস্য শত্রু করোনাভাইরাস থেকে বাগেরহাট জেলা শহরের লোকজনকে মুক্ত রাখতে ভয়কে জয় করে ফ্রন্টলাইনে থেকে প্রতিরোধে যুদ্ধে নেমেছেন তারা।
বাগেরহাট রেডক্রিসেন্টের যুব ইউনিটের এসব করোনা যোদ্ধারা করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে জেলা সদরের এই পৌরসভার ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষদের নিরাপদ রাখতে তাদের বাসা–বাড়ীতে কোন লাভ ছাড়াই ক্রয়মূলে পৌছে দিচ্ছেন বিষমুক্ত তাজা সাক–সবজি, মাছ–মাংশসহ চাহিদ ামতো খাদ্যপন্য। অনেকের মতো হটলাইনে ফোন করে আমিও তাদের সেবা নিচ্ছি।সত্যই তারা প্রশংসিত কাজ করছে।
স্কুল শিক্ষিকা মানসুরা খানম চম্পা জানান, আমি জানতে পারি রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের হটলাইনে ফোন করলেই যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা শহরের বাসা–বাড়ীতে গিয়ে ডাক্তারের ‘ব্যবস্থাপত্র’ এনে রোগীদের হাতে ওষুধ পৌছানোসহ খাদ্যপন্যের সেবা দিচ্ছে। এখবর জানতে পেরে প্রথম থেকেই অসুধ, বিদ্যুতের ডিজিটাল মিটারের বিল রিচার্জ করাসহ ব্যাংক লেনদেন করার পাশাপাশি রেডক্রিসেন্টের খাদ্যপন্যের সেবা নিচ্ছি। বাজার মেূল্য ছাড়া কোন লাভ বা সার্ভিস চার্জ নেয়না। যুব রেডক্রিসেন্টের সেচ্ছাসেবকদের এসব সেবার কারনে আমার মতো শত–শত পরিবারকে জরুরী প্রয়োজনেও ঘর থেকে বের হওয়া লাগছেনা। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
বাগেরহাট রেডক্রিসেন্টের যুব প্রধান মো. শরিফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, যুবরেডক্রিসেন্টের সদস্যরা করোনাভাইরাস আক্রান্তের ঝঁকি মাথায় নিয়ে জরুরী পরিস্থিতির মধ্যে বাগেরহাট শহরের লোকজনকে ঘরে রাখতে হটলাইনে তথ্য জেনে সেবা দেয়া হচ্ছে। শহরের লোকজনের বাসা–বাড়ীতে স্বেচ্ছাশ্রমে সাক–সবজি, মাছ–মাংসসহ খাদ্যপন্য, ওসুধ, বিদ্যুতের ডিজিটাল মিটারের বিল রিচার্জ করাসহ ব্যাংক লেনদেন সেবা দিচ্ছি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বাগেরহাট রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের সাধারন সম্পাদক তালুকদার নাজমুল কবির ঝিলাম বলেন, আমরা নতুন দূর্যোগ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে লোকজনকে ঘরে থাকতে ও সচেতন করতে লিফলেট বিতরন ও মাইকিং করার পাশাপাশি সড়ক–দোকানপাট–হাসপাতাল এবং কারাগারে নিয়মিত জীবানুণাষক স্প্রে করছি। একই সাথে আমরা এই এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পন্য নষ্ট না হয় ও ঘরবন্দি মানুষদের যাতে বাইরে বের হয়ে করোনা ঝুঁকিতে পড়তে না হয়, সেজন্য বাগেরহাট পৌর এলাকার বাসা–বাড়ীতে প্রথম থেকেই বিষমুক্ত তাজা সাক–সবজি কোন লাভ ছাড়াই ক্রয়মূল্যে পৌছে দিচ্ছি।
এর পাশাপাশি যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা বাগেরহাট শহরের করোনা ঝঁকি কমাকে অন্যান্য খাদ্যপন্য পৌছে দেয়ার পাশাপাশি রোগীদের ওসুধ, বিদ্যুতের ডিজিটাল মিটারের বিল রিচার্জ করাসহ ব্যাংক লেনদেনও করে দেয়া হচ্ছে। পাইকারী মূল্যে পন্য কিনতে পারলে খুচরা বাজোরের চেয়েও কমদামে আমরা শহরবাসির ঘরে খাদ্যপন্য পৌছে দিতে পারবো।