প্রতিনিধি ১৯ এপ্রিল ২০২৩ , ৪:৪০:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ
সাকিল আহমেদ, পাথরঘাটা বরগুনা প্রতিনিধি:
বিষখালী ও বলেশ্বর নদীতে মাছ না থাকায় হতাশায় দিন কাটছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার হাজারো জেলে পরিবারের। কি দিয়ে তাদের পরিবারকে ঈদের জামা কাপড় কিনে দিবে এমন দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। এমনকি তাদের জীবনযাপন করাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। নদীতে মাঝে মাঝে দুই একটি ইলিশ ধরা পরলেও অধিকাংশ সময় শূন্য হাতে তীরে ফিরতে হচ্ছে। সামনে ঈদ নদীতে মাছ নেই এছাড়াও দৈনন্দিন জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেকেই জেলে পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলেরা।
পাথরঘাটা উপজেলা সদর ইউনিয়নের পদ্মা সুইচগেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ওই এলাকার অধিকাংশ ট্রলারে ঘাটে বেঁধে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় জেলে ইব্রাহিম, শহিদ নাজির, ইলিয়াস বলে, গত বছরের তুলনায় এবছর নদীতে মাছ অনেক কম। মাঝে মাঝে দুই একটি ইলিশ ধরা পরলেও তা বিক্রি করে আর সংসার চলেনা। এমনকি নদীতে যাওয়া আসা খরচ টাই হচ্ছেনা। ঈদ এসে গেছ মা-বাবা, ছেলে মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। কি দিয়ে তাদের ঈদের জামা কাপড় কিনে দিবে নদীর ব্যবসা করে কোনমতে টিকে আছি।
স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী আরদ্ধার সোনা মিয়া বলেন, গতবছর প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে আড়াই মন ইলিশ বিক্রি করেছি। কিন্তু এ বছর নদীতে মাছ না থাকায় এখন প্রতিদিন এক থেকে দেড় মন ইলিশ বিক্রি করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। গতবছর প্রতি মন ইলিশ ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছি। এখন ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা মন। গত বছরের তুলনায় এ বছর মাছের দাম বেশ চড়া। এর প্রভাব পড়েছে হাট বাজার সকল মালামালের উপর। এমন চলতে থাকলে মাছ কেনাবেচা করাটাই কঠিন হয়ে পড়বে।
সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, পাথরঘাটার শতভাগ মানুষ কোন না কোনভাবে মৎস্য ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। নদীতে মাছ পেলেই কেবল উপকূলের মানুষের হাতে টাকা থাকে। এমন সময় নদীতে মাছ না পাওয়ায় পরিবার পরিজনকে নতুন কাপড় কিনে দিতে পারছেনা তার। ফলে তাদের ঈদ আনন্দ আর হবেনা।
পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকতা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, বিষখালী ও বলেশ্বর নদীতে স্রোত ও গভীরতা কমে যাওয়ায় ইলিশ বিচরণের জন্য অনুকূল পরিবেশ নেই। এখন আগের মতো জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে না। তবে আগামী কয়েক সপ্তাহে অনেক ইলিশ ধরা পড়বে বলে তিনি আশাবাদী।