প্রতিনিধি ২৬ অক্টোবর ২০২০ , ৪:৪৮:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ
ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন কৃষকের পিছু ছাড়ছেই না। একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষকের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাচ্ছে। চতুর্থ দফা বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে দিগন্ত জোড়া সবুজের মাঠে কৃষক স্বপ্ন বুনছিল। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সারা দেশের ন্যায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে গত তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টি, দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে কৃষকের সেই স্বপ্ন মাটিতে মিশে গেছে। উপজেলার বেশিরভাগ উঁচু এলাকার ক্ষেতের ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। আমন ধানের সবেমাত্র শীষ ফুটতে শুরু করেছে। এই সময় বৃষ্টি আর বাতাসে ধানের শীষের ফুল ঝড়ে পড়ার কারণে ও মাটিতে নুয়ে পড়া ধান গাছগুলো পচন ধরায় চলতি রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শত শত হেক্টর আমন ক্ষেতের ধান গাছ দুমড়ে মুচরে হেলে যেন মাটিতে শুয়ে পড়েছে । হেলে পড়া ধানের শীষ পচে নষ্ট হওয়ায় আশংকা করছেন কৃষকরা। তারা প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন হেলে পড়া ধান গাছগুলো গোছা করে আটি বেঁধে খাড়া করে রাখতে। অনেক জায়গায় কৃষক হেলে পড়া ধোর ধান কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছেন।
উপজেলার পাইকের ছড়া ইউনিয়নের পাইক ডাঙ্গা গ্রামের কৃষক নজরুল জানান, বন্যায় নিচু এলাকার আমন ধান পচে নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আগেই। উচু জমিতে কিছু ধান ছিল । কিন্তু তাদের দেড় থেকে দুই বিঘা আমন ক্ষেত বাতাসে হেলে মাটিতে শুয়ে পড়েছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি। গছিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রেজাউল জানান, দমকা হাওয়ায় তার প্রায় দেড় বিঘা জমির ধান মাটিতে পড়ে গেছে। এবার আমন ধানের আবাদে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হবেন। ভ‚রুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের নলেয়া গ্রামের কৃষক শহিদুল মিয়া জানান, তার আমন ক্ষেতে কেবলমাত্র ফুল এসেছে। এরমধ্যে বাতাস আর বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে মোট ১৬ হাজার ৭১৪ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩০হেক্টর জমির ধান মাটিতে হেলে পড়েছে।প্রাকৃতিক দ‚র্যোগে তো আমাদের করার কিছু থাকে না। আমরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের হেলে পড়া ধান গাছগুলো ছোট ছোট করে আঁটি বেঁধে তুলে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়াও যে সব জমিতে পানি জমেছে সেই জমির আইল কেটে পানি বের করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। এতে করে কৃষকের ক্ষতির পরিমান কিছুটা হলেও কমবে।