ঢাকা

মনোহরদীতে শ্রমিক সংকট একদিনের পারিশ্রমিক দেড় মণ ধান

  প্রতিনিধি ৯ মে ২০২২ , ৭:০০:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি: নরসিংদীর মনোহরদীতে চলছে বোরো ধান কাটার ধুম। প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে চাষীরা ক্ষেত থেকে পাকা ধান সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফলন ভালো হলেও স্বস্তিতে নেই কৃষক ও গৃহস্থরা। ধানকাটা ও মাড়াইয়ের জন্য দিনমজুরের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া মজুরি বেশি হওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষকরা।

কৃষি শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় মাঠের পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন তারা। চলতি মৌসুমে এক দিনের জন্য প্রতি শ্রমিককে তিনবেলা খাওয়াসহ ১১শ থেকে ১২শ টাকা করে দিতে হচ্ছে। সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার চাষীরা ধান কাটছেন এবং ঘরে তুলছেন।
ধান কেটে ঘরে তোলার পর বিক্রির সময় দাম না পাওয়ায় কৃষকদের মুখে হতাশার রেখা ফুটে উঠেছে। অনেকে ধানের বাজারদর শুনে ধান উৎপাদন খরচ তুলতে পারবেন কি না এমন দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে মাঠে ধান কাটছেন।

কৃষকরা জানান, ১ বিঘা জমিতে ধান রোপন থেকে শুরু করে কাটা মাড়াই পর্যন্ত খরচ পড়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে কৃষক ধান পায় ১৮ থেকে ২০ মণ। সে তুলনায় কৃষক এবার বিঘা প্রতি পাবে ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে কথা হয় শুকুন্দী এলাকার কৃষক মানিক মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। এতে আমার প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি আশা করছি ৯০ মণ ধান পাবো। এতে আমি লাভবান হবো না। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় লাভবান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

ধান কাটার কামলার দাম, সার ও কীটনাশসহ প্রয়োজনীয় সকল উপকরণের দাম বেশি। শুধু ধানের দাম কম। প্রতি মণ ধানের দাম ৮শ টাকা আর একজন কামলার প্রতিদিনের মজুরি ১২শ টাকা। এই দামে ধান বিক্রি করে প্রতিবিঘা জমিতে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।’

বর্গা চাষী আবুল কালাম বলেন, ‘লাভের আশায় ধার করে বোরো ধান আবাদ করেছিলাম। ধানচাষে যে খরচ আর মৌসুমের সময় কামলার যে দাম তাতে খরচ উঠানোই সম্ভব নয়।’ মনোহরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার জানান, ‘চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১০ হাজার ৯১৭ হেক্টর জমিতে। আবাদ করা হয় ১০ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে। এবার চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার মেট্রিক টন। ফলনও ভালো হয়েছে। ধান কাটার শেষ সময় পর্যন্ত প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে কৃষক নিশ্চিত লাভবান হবেন।’