প্রতিনিধি ১৭ জুন ২০২১ , ৬:৪৩:১০ প্রিন্ট সংস্করণ
মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালি ইউনিয়নের পাচুড়িয়া এলাকায় জনবসতিপূর্ন এলাকায় অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার মুরগির বিশাল পোলট্রি খামার। মুরগির খামারের বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। এতে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শতাধিক পরিবার। অভিযোগ উঠেছে, নীতিমালা উপেক্ষা করে গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় খামারটি স্থাপন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মহা পরিচালক পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা, উপ-পরিচালক পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর, জেলা প্রশাসক মাগুরা, পুলিশ সুপার মাগুরা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহম্মদপুর, ওসি মহম্মদপুর, ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গ্রামবাসী। লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে পাচুড়িয়া গ্রামের মৃত, অশিত বিশ্বাসের ছেলে ধনঞ্জয় বিশ্বাস গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্রয়লার মুরগির খামার স্থাপন করেন।
বর্তমানে খামারে প্রায় ৪ হাজার মুরগি ও ৫ শত হাঁস রয়েছে। হাঁস-মুরগির বিষ্ঠার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধে স্থানীয় লোকজনের দরজা বন্ধ করে খাবার খেতে হচ্ছে। খামারের চারদিকে মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে।
অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হতে হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনগণের ক্ষতি হয় এমন স্থানে খামার স্থাপন করা যাবে না।
সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, খামারটির আশপাশে মুরগির বিষ্ঠা ও মরা মুরগি ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে যত্রতত্র। পানিনিষ্কাশনের কোনও ব্যবস্থাই নেই।
খামারের চারপাশে বসতবাড়ি। এসব বাড়ি থেকে তীব্র দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। গ্রামের বাসিন্দা সম্রাট কুমার সিংহ বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই খামার। বিষ্ঠা থেকে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। আশপাশে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।’ পেট ভরে পরিবারের কেহই ঠিকমত দুমুঠো ভাত খেতে পারছিনা। গন্ধে দরজা জানালা বন্ধ করেই খাবার খেতে হচ্ছে পরিবারের লোকজনদের।
কলেজছাত্র অনিমেষ বিশ্বাস, অলোক বিশ্বাস, সোহাগ সরকার ও অনিক রায় বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে খামারটি সরানোর জন্য গত বছরের ১৬ ই জুন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন গ্রামবাসী। পরে একই তারিখে ইউএনওর কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়। পরে ৭ই অক্টোবর পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তর খামারটি পরিদর্শন শেষে খামার মালিককে খামার বন্ধের নির্দেশ দিলেও বহাল তবিয়তে খামার চালিয়ে যাচ্ছেন খামার মালিক। খামার মালিক ধনঞ্জয়ের সাথে কথা বললে তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বা অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে খামারটি স্থপন করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন। তবে তিনি কেন অবৈধভাবে খামারটি স্থাপন করেছেন সে বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
বাবুখালি ইউপির চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন বলেন, খামারটি বন্ধ করে দেবার কথা তবে পরে চালু করেছে কিনা সেটি আমার জানা নেই। ওইখানে খামার থাকলে প্রায় শতাধীক পরিবারের প্রাণ স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে এছাড়া ওই এলাকার রাস্তাঘাট দিয়ে দূর্গন্ধের কারনে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন দুর্গন্ধের কারনে ওই রাস্তা রেখে অন্য রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কর্তা ডা. হাদিউজ্জামান বলেন, আমি কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি তবে নীতিমালা উপেক্ষা করে কেহ খামার স্থাপন করা হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।