প্রতিনিধি ২২ মে ২০২২ , ৫:১৭:২২ প্রিন্ট সংস্করণ
সাম্প্রতিক সময়ে মাঙ্কিপক্স এক অজানা আতঙ্কের নাম। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মাঙ্কিপক্স নামের বিরল এই রোগ। চলতি মাসের শুরু থেকে এ সংক্রমণ বাড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, এরই মধ্যে ১২ দেশের মোট ৮০ জনের মধ্যে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে। ভাইরাসটি খুবই সংক্রামক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
নাক, মুখ, চোখের পাশাপাশি আক্রান্তের পোশাক থেকেও সংক্রমিত হতে পারে এই ভাইরাস। আবার সংক্রমিত বানর, ইঁদুর ও কাঠবিড়াল এবং ভাইরাসযুক্ত বস্তু যেমন বিছানাপত্র ও জামাকাপড়ের সংস্পর্শে এলেও ছড়াতে পারে ভাইরাসটি। যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে এ রোগ ছড়াতে পারে-আগে এমনটা বলা না হলেও এখন ধারণা করা হচ্ছে, যৌন মিলনের সময় সরাসরি সংস্পর্শে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে।
তবে যুক্তরাজ্য ও কানাডায় মাঙ্কিপক্সের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর বেশিরভাগই যৌন সম্পর্কযুক্ত বলে জানা গেছে।
মাঙ্কিপক্স বিরল ও স্বল্পপরিচিত একটি রোগ। মাঙ্কিপক্স আসলে একটি জুনোটিক ভাইরাস। যা প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে ছড়ায়। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রেইনফরেস্টের কাছাকাছি এলাকায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি ঘটে। নাম মাঙ্কিপক্স হলেও একাধিক বন্যপ্রাণীর মাধ্যমে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস। এই ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়ায় ইঁদুরের মাধ্যমে।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস অর্থোপক্স ভাইরাস পরিবারের সদস্য। এটি দুটি স্বতন্ত্র জেনেটিক স্ট্রেন বা আছে। মধ্য আফ্রিকান (কঙ্গো বেসিন) ক্লেড ও পশ্চিম আফ্রিকান ক্লেড। কঙ্গো বেসিন ক্লেড আরো সহজে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি এর লক্ষণও বেশি গুরুতর।
লক্ষণ
রোগটির প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরে ফোলাভাব, পিঠে ব্যথা, পেশিতে ব্যথা। একবার জ্বর কমে গেলে ফুসকুড়ি তৈরি হতে পারে। মুখ থেকে শুরু করে এ ফুসকুড়ি পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হাতের তালু ও পায়ের তলায় এ ফুসকুড়ি বেশি দৃশ্যমান হয়। ফুসকুড়িতে চুলকানি হতে পারে। ভাইরাসটি নির্মূলের পর ক্ষতের দাগ থেকে যেতে পারে। ভাইরাসটি নিজে থেকেই দুর্বল হয়ে মারা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে এটি রোগীর শরীরে ১৪ থেকে ২১ দিন স্থায়ী হতে পারে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভাইরাসটি হালকা প্রকৃতির। মাঙ্কিপক্স কখনো কখনো অনেক গুরুতর হতে পারে। পশ্চিম আফ্রিকায় ভাইরাসটির সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে এ রোগে মৃত্যুর হার ১০ শতাংশ বলে জানা গেছে।
চিকিৎসা
মাঙ্কিপক্সের কোনো চিকিৎসা নেই, তবে সংক্রমণ প্রতিরোধের মাধ্যমে প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে গুটিবসন্তের বিরুদ্ধে টিকা ৮৫% কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। জানা গেছে, মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য হাজার হাজার ডোজ গুটিবসন্ত ভ্যাকসিনের অর্ডার দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে স্পেন।