বাংলাদেশ

মিডিয়া সামলাতে ‘যোগ্য মুখপাত্র’ পাচ্ছে না স্বাস্থ্য অধিদফতর!

  প্রতিনিধি ১০ আগস্ট ২০২০ , ১১:৩০:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

মুখপাত্র হিসেবে বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়া অর্থাৎ গণমাধ্যমকর্মীদের সামলাতে পরিচালক পদমর্যাদার একজন যোগ্য কর্মকর্তার সন্ধানে নেমেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত কয়েকদিন ধরে বেশ কয়েকজনের নাম শোনা গেলেও বর্তমান করোনাকালীন পরিস্থিতিতে ‘যোগ্য মুখপাত্র’ হিসেবে গণমাধ্যমকর্মীদের সামলাতে তারা কেউ রাজি হচ্ছেন না! এ দায়িত্ব গ্রহণ করলেই তারা গণমাধ্যমকর্মীদের ‘নানা তীর্যক প্রশ্নের মুখে সমালোচিত হবেন এবং ভবিষ্যৎ পথচলায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে’ আশঙ্কায় অনীহা প্রকাশ করছেন তারা।

নবনিযুক্ত স্বাস্থ্য মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম নিজেই অধিদফতরের যোগ্য মুখপাত্র হিসেবে একজন পরিচালক খুঁজছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্ভরযোগ্য দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, অধিদফতরের মুখপাত্র হিসেবে হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার করোনাকালীন দায়িত্ব পালন করছিলেন। শুধু করোনাকালীন নয়, ডেঙ্গু পরিস্থিতি ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগকালেও তিনি দক্ষতার সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের বেশ ভালোভাবেই সামলেছেন। এ কারণে গণমাধ্যমকর্মীরা তার ওপর বেশ সন্তুষ্ট।

তবে হঠাৎ করেই গত মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন অধিশাখা) মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার প্রদান ও টকশোতে অংশগ্রহণের আগে স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের অনুমতি লাগবে- মর্মে নির্দেশনা জারি হয়। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে ব্রিফিং ও সাক্ষাৎকার প্রদান বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের বিষয়ে অংশগ্রহণকারীকে ন্যূনতম পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা হতে হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়, বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে স্বাস্থ্যবিভাগের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মুখপাত্র হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন ও অধিদফতরের প্রতিনিধিত্ব করেন। নিয়মিত ব্রিফিং ছাড়াও এসব বক্তব্য ও মন্তব্যের কারণে অনেকসময় সরকারকে বিব্রত হতে হয়। প্রচারমাধ্যমে সরকারের প্রতিনিধিত্ব করার বিষয়ে যথাযথ বিধিবিধান অনুসরণ বাঞ্ছনীয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষে বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে ব্রিফিংয়েও সাক্ষাৎকার প্রদান বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের বিষয়ে মহাপরিচালকের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন এবং অংশগ্রহণকারীকে ন্যূনতম পরিচালক পদমর্যাদার হতে হবে। জনস্বার্থে নির্দেশনা প্রতিপালনের জন্য অনুরোধ করা হলো বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা ছাড়া কেউ গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার প্রদান কিংবা টকশোতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না- এমন নির্দেশনার ফলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকাণ্ড আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পরিচালক বলেন, পরিচালক হিসেবে তাদের এমনিতেই অনেকে ব্যস্ত থাকতে হয়। বর্তমানে গণমাধ্যমের সংখ্যা অনেক হওয়ায় তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের জবাব ও বক্তব্য দিতে হলে- মিডিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে এবং স্বাস্থ্য খাতের তথ্য-উপাত্ত নখদর্পণে রয়েছে; এমন একজনকে নিয়োগ দিতে হবে। নতুবা কথা বলতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলবেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে তাদের সবচেয়ে বড় ভয় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ক্যামেরার সামনে সাক্ষাৎকার দেয়া। তাৎক্ষণিকভাবে প্রশ্নের উত্তরে অনেকসময় গুছিয়ে বলা যায় না। তাছাড়া ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো অনেকসময় সম্পূর্ণ বক্তব্য প্রচার না করার ফলে অধিদফতরের কর্মকাণ্ড সমালোচিত হয়।

আরও খবর

Sponsered content