মিরসরাই, প্রতিনিধি:
মিরসরাই সার্কেল এএসপি ইফতেখার হাসানের বিরুদ্ধে হয়রানি ও দুরব্যবহারের অভিযোগ এনে ডিআইজি বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মিরসরাইয়ের ৩ অপদস্থ নারী।
সোমবার ( ২৭ মার্চ) পুলিশ উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) চট্টগ্রাম বরাবরে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগ কারীরা হলেন, মিরসরাই উপজেলার ৩নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড মহাজনহাট এলাকার ইমামপুর গ্রামের মৃত মুকছুদ আহম্মদের ৩ মেয়ে নাজরীন ফৌজিয়া, পারভীন ফৌজিয়া ও নাছিমা খানম।
তিনবোন স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, গোলাম মাওলা নামে তাদের এক ভাইকে মাদকাসক্ত বানিয়ে বায়না নামা ও আমমুক্তার নামার মাধ্যমে করেরহাট ইউনিয়নের দুই প্রভাবশালী কাঠ ও বালি ব্যবসায়ী বেলাল ও এমরান ৫০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। সম্পত্তি আত্মসাৎ থেকে বাঁচাতে দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মাধ্যমে নালিশি সম্পত্তি বেচা-বিক্রি ও বায়নানামা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেলাল ও এমরানের যোগসাজশে মিরসরাই সার্কেল এএসপি ইফতেখার হাসান মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে উক্ত সম্পত্তি দখল ছাড়িয়া দেয়ার জন্য বেআইনি হস্তক্ষেপ করেন। হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখান বর্তমান ভুমি মালিক এই ৩ বোন ও তার দুই ভাইকে। কিন্তু জমি রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত আদালতের রায় নিষেধাজ্ঞা জারি আছে বলায় অভিযোগকারী ৩ নারীকে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তার কার্যালয় হইতে অপমান অপদস্থ করিয়া বাহির করিয়া দেওয়া হয়। এছাড়া অভিযোগে বলা হয় পুলিশ কর্মকর্তা ইফতেখার হাসান গত ১৩ বছর যাবত মিরসরাই-জোরারগঞ্জ-সীতাকুন্ডসহ চট্টগ্রাম জেলা এলাকায় থেকে জায়গা জমির অবৈধ সিন্ডিকেট বাণিজ্য করে আসছেন। তাই তার বিরুদ্ধে যেন বিভাগীয় তদন্ত পূর্বক উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়।
নাছরীন ফৌজিয়া এই প্রতিনিধিকে জানান, ভাইয়ে বোনে যখন অভিযুক্ত জায়গা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয় তখনি আমরা সার্কেল এএসপি বরাবর একটি লিখিত অবহিতকরণ আবেদন পেশ করি। জায়াগা জমিসংক্রান্ত বিষয় উনার এখতিয়ার ভুক্ত নয় বলে পত্রটি তিনি গ্রহন করেন নি। কিন্তু পরবর্তীতে সিন্ডিকেটের পক্ষ হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে তিনি একটি অভিযোগ পত্র গ্রহন করেন। ওই অভিযোগ পত্র মুলে আমাদের এক ভাইকে বেআইনি ভাবে তার গাড়ি পাঠিয়ে কার্যালয়ে তুলে নিয়ে আসেন। এই সময় আমার ভাইকে হুমকি ধামকি দেন যেন এক সপ্তাহের মধ্যে তার সিন্ডিকেট সদস্য বেলাল ও এমরানকে জমির দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়। আমার ভাইয়েরা যখন জানায় উক্ত জমিতে বোনদের অংশ রয়েছে ও জমি রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে তখন আমাদের ৩ বোনকে তার কার্যালয়ে তলব করে। আমরা তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তার কক্ষে রাখা সোফায় বসতে চাইলে আমাদের বসতে দেয়া হয়নি। আমাদের দরখাস্ত গ্রহন না করে অপর পক্ষের অভিযোগ গ্রহন করাটা কতটা যুক্তিসঙ্গত জানতে চাইলে তিনি আমাদের সাথে উত্তেজিত হয়ে যান। উত্তেজিত হয়ে তিনি আমাদের সাথে মারাত্মক মানহানীকর আচরন করেন ও তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে যেতে নির্দেশ দেন। একজন পুলিশের উদ্ধতন কর্মকর্তার এমন অপেশাদার আচরণে আমরা হতবাক হয়ে পড়ি ও সার্কেল অফিস ত্যাগ করি।
মিরসরাই সার্কেল এএসপি ইফতেখার হাসান জানান, তাদের ভাইয়ে বোনে জায়গা জমি সংক্রান্ত ঝামেলা এখন ব্যাক্তিগত সুবিধা নিতে পুলিশকে ঝড়ানো হচ্ছে। তাদের কোন ভাইকে আমি তুলে আনি নাই এটা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার। এছাড়া যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে তাদের সাথেও আমার এমন কিছু হয়নি। আর অভিযোগের কোন নথি আমার কাছে এখনো আসেনি তাই অফিসিয়ালি আমি এব্যাপারে কিছু জানিনা।
বিষয়টি জানতে চট্টগ্রাম জেলা এসপি শফিউল্লাহ কে বারবার ফোন করে পাওয়া যায় নি।